নৌকার প্রচারণায় অংশ নেওয়া ৯২ বছর বয়সী শ্রীমতি কামবালার জন্য উপহার নিয়ে দেখা করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। নিজের উঠানে প্রতিমন্ত্রীকে দেখতে পেয়ে কামবালা বলেন, ‘মুই খুব খুশি হইচো, মোর বেটা মোক দেখিবার আইচ্চে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনের বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের কালিয়াগঞ্জ বাজারে নির্বাচনি পথসভায় শ্রীমতি কামবালা শত শত মানুষের বাধা উপেক্ষা করে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।
সেই সময় ১০ টাকার একটি নোট উপহার দিয়ে কামবালা প্রতিমন্ত্রীকে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দিতে অনুরোধ করেন এবং এই টাকা নির্বাচনে ব্যয় করার কথা বলেন। এর বাইরে অন্যদের কাছেও নৌকার পক্ষে ভোট চান।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পরপর দ্বিতীয়বারের মতো নৌ-প্রতিমন্ত্রী হন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে প্রথমবারের মতো বাড়িতে এসে রবিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে ছুটে যান সেই শ্রীমতি কামবালার গ্রামের বাড়ি গোদাবাড়ীতে।
কামবালার ছনের ঘরের সামনে গিয়ে নৌ-প্রতিমন্ত্রী এসে পৌঁছালে আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কেঁদে ফেলেন কামবালা। এসময় তার ছনের ঘরের সামনেই তাকে একটি শাল, শাড়ি, শীতের পোশাক সোয়েটার ও কামবালার বাঁধাই করা দুটি ছবি উপহার দেন প্রতিমন্ত্রী। এছাড়া কামবালার ছেলের বউকেও উপহার দেন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এসময় কামবালা প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, ‘বেটা তুই মোর বাড়িত আইচ্চি, মুই খুব খুশি হইচু। মোর ঘড়ত বসিবার জায়গা নাই। আগিনাত বস। মোড়তায় এত কিছু আনিবার কী দরকার ছিল।’
উত্তরে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি তো ছেলের মতই, তাই দেখিবা আইচ্চু।’
পরে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি নির্বাচনের আগে এই এলাকায় একটি পথসভায় যখন আসলাম, তখন হাজার হাজার মানুষের ভিড় উপেক্ষা করে এই নব্বই ঊর্ধ্ব কামবালা আমার কাছে পৌঁছান। তখন তিনি একটি ১০ টাকার নোট উপহার দিয়ে আমাকে বলেন নৌকায় ভোট দিতে এবং এই ১০ টাকা নির্বাচনের খরচ হিসেবে কাজে লাগাতে।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমি ছোট সময় থেকে নির্বাচনে কাজ করেছি। প্রচার-প্রচারণা করেছি। নিজের নির্বাচনে কাজ করেছি। কিন্তু একজন ভোটার আমার কাছে (নৌকার প্রার্থীর কাছে) ভোট চেয়েছে এই অভিজ্ঞতা প্রথম। নব্বই ঊর্ধ্ব এক নারী নৌকার প্রার্থীর কাছে নৌকার ভোট চাইছেন, যে দাবিটা করেছেন এবং নির্বাচনি খরচ দিয়েছেন, সত্যিই আমি মুগ্ধ। আমি যখন নির্বাচিত হয়েছি তখনই ঠিক করেছিলাম শ্রীমতি কামবালার বাড়িতে যাবো। আজ এলাম, আসার পরে উনার ব্যবহারে আমি আরও মুগ্ধ।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘তিনি হচ্ছেন এই নির্বাচনে সবচেয়ে পবিত্র এবং দামি ভোটার। এই রকম একজন মানুষ যখন একজন প্রার্থীকে আশীর্বাদ দেয়, তখন সৃষ্টিকর্তা তার দিকে চোখ তুলে তাকায়। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা মানুষের জন্য যে কাজ করছেন, এটা নব্বই ঊর্ধ্ব একজন মানুষের মধ্যে তা প্রতিফলিত হয়েছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন, এর সাক্ষী হয়ে আছেন কামবালা। সেই যে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসেছেন, নৌকাকে ভালোবেসেছেন, আজ নব্বই বছরেও বার্ধক্য উনাকে হার মানাতে পারেনি। বার্ধক্য উপেক্ষা করে নৌকা মার্কার প্রচারণা সভায় অংশ নিয়েছেন, এটা আমাদের জন্য একটা শিক্ষা।’
‘সত্য ও সুন্দরের জন্য কোনও কিছু আটকায় না, এটা কামবালা প্রমাণ করেছেন। আমি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি’, যুক্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।
পরে প্রতিমন্ত্রী বিরলের ধর্মপুরে জাতীয় চারণকবি উৎসব ২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান