Home » সিলেট-৫ স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নিয়ে নতুন হিসাব নিকাশ

সিলেট-৫ স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নিয়ে নতুন হিসাব নিকাশ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরীকে নিয়ে গোটা নির্বাচনী এলাকায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। হুছামুদ্দীন শক্তিশালী প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীসহ অন্য প্রার্থীরা অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন। এর মধ্যে হুছামুদ্দীন চৌধুরীর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে দিচ্ছে। সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে তাকে নিয়ে আলোচনা বেড়েছে সমান তালে। সমর্থন আদায়ে পুরো নির্বাচনী এলাকায় তার কর্মী সমর্থকরা চষে বেড়াচ্ছেন।

সিলেটের জনপ্রিয় এই আলেম গত ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। এর পর থেকে তাঁদের সাক্ষাতের সংবাদ ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।  বৈঠকের পর থেকেই হুছামুদ্দীনের নির্বাচনী এলাকায় তাঁর অনুসারীরা বিষয়টিকে ‘শুভ ইঙ্গিত’ বলে প্রচার শুরু করেন।

জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা হুছামুদ্দীন চৌধুরীর প্রয়াত বাবা আল্লামা আবদুল লতিফ চৌধুরী সারা দেশে ‘ফুলতলী ছাহেব’ নামে পরিচিত। মাওলানা আবদুল লতিফের তৈরি করা সংগঠন আনজুমানে আল ইসলাহ ও আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ায় অসংখ্য ভক্ত ও মুরিদ আছেন। ফুলতলীর অনুসারীদের সিলেট-৫ আসনে একটা ‘ভোটব্যাংক’ আছে। এ অবস্থায় প্রতিটি নির্বাচনের আগেই এসব ভোট কোন প্রার্থীর পক্ষে যাবে, এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা আলোচনা থাকে।

সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মাসুক উদ্দিন আহমদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হুছামুদ্দীন চৌধুরী ছাড়াও আরও পাঁচজন প্রার্থী আছেন। তাঁরা হলেন জাতীয় পার্টির শাব্বীর আহমদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মো. খায়রুল ইসলাম, তৃণমূল বিএনপির কুতুব উদ্দীন আহমদ শিকদার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. বদরুল আলম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আহমদ আল কবির।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়।প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান।

সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমে দুপুর আড়াইটার দিকে সিলেট-৫ আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।

সিলেট-৫: আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ পেয়েছেন নৌকা, স্বতন্ত্র প্রার্থী ডক্টর আহমদ আল কবির পেয়েছেন ট্রাক ,স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী কেটলি ,  তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কুতুব উদ্দীন আহমদ শিকদার সোনালী আঁশ, জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাব্বীর আহমদ লাঙ্গল , বাংলাদেশ কংগ্রেস’র প্রার্থী মো.বদরুল আলম ডাব প্রতীক এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) প্রার্থী মো. খায়রুল ইসলাম পেয়েছেন হাতপাঞ্জা।

আলাপকালে মাওলানা হুছামুদ্দিন চৌধুরী বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে না,ঐসব দলের নির্যাতিত নেতৃবৃন্দ এবং অধিকার ও সুবিধা বঞ্ছিত মানুষের পক্ষে সংসদে কথা বলার জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচিত হলে মাদ্রাসা শিক্ষার স্বকিয়তা রক্ষাসহ পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম বিরোধী বিষয়াদি দুরীকরণে সাহসী ভূমিকা পালন করবো।

তিনি আরোও বলেন, কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে নির্বাচিত হলে একাত্তর বিধি অনুযায়ী দলীয় সিন্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া যায় না, তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হয়ে সর্বস্থরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। স্থানীয় উন্নয়নের ব্যাপারে সকল প্রকার বৈষম্য ও আঞ্চলিকতার উর্ধ্বে থেকে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বিগত দিনের মতো সুখে দুখে মানুষের পাশে থাকবো।

উল্লেখ্য, জকিগঞ্জ-কানাইঘাট বরাবরই ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলেম উলামাদের পুণ্যভূমি। এই আসন থেকে এর আগে মাওলানা মুশাহিদ বায়মপুরী (রহ), মাওলানা ওবায়দুল হক উজিরপুরী (রহ) ও মাওলনা ফরীদউদ্দীন চৌধুরী সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাছাড়া দীর্যদিন থেকে মাওলনা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলীকে এই আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য গণমানুষের দাবী ছিল। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশ, জাতি ও শিক্ষা ব্যবস্থার স্বকীয়তা রক্ষার বৃহত্তর স্বার্থে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন মাও. হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *