চার দিন পরে… রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গত শুক্রবার এমনই মন্তব্য করেছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কিন্তু সোমবার আদালতে গোটা শুনানি পর্বে তাঁর মন্তব্যের আক্ষরিক প্রতিফলন দেখা গেল না। সোমবার তাঁকে আদালতে হাজির করায় ইডি। আদালত রাজ্যের মন্ত্রীকে আরও সাত দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। তা হলে ‘চার দিন পরে’ জ্যোতিপ্রিয় কেন বলেছিলেন তা স্পষ্ট হয়নি। তবে সোমবারের শুনানিতে একটি পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। ইডির হয়ে আদালতে সওয়াল করেন নতুন আইনজীবী। গত শুনানিতে জ্যোতিপ্রিয়ের মামলায় ইডির আইনজীবী ছিলেন ফিরোজ় এডুলজি। এখন দাঁড়িয়েছেন আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী। তিনি কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেলও। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী পরিবর্তনের মধ্যেও কোনও ‘রহস্য’ আছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। কারণ, সম্প্রতি কামদুনি গণধর্ষণ মামলায় আইনজীবী এডুলজির ‘অবস্থান’ ঘিরে বিতর্ক হয়।
সম্প্রতি কামদুনি গণধর্ষণ মামলায় আইনজীবী এডুলজির ভূমিকা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে। ওই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি আনসারি আলির হয়ে সওয়াল করেছিলেন তিনি। গত মাসে হাই কোর্ট শাস্তি কমিয়ে ওই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা তোলে তৃণমূলের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে গেরুয়া শিবির কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে। তবে তৃণমূলের মন্ত্রীর হয়েও এডুলজিকে হাই কোর্টে লড়াই করতে দেখা গিয়েছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির বিরুদ্ধে কুমন্তব্যের অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় এডুলজি ছিলেন অখিলের আইনজীবী। তখন থেকেই বিজেপির ‘ব্যাড বুক’-এ তাঁর নাম।
সোমবার ইডির আইনজীবী বদল নিয়ে প্রকাশ্যে ইডি কিছু জানায়নি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সূত্রে খবর, এ বার থেকে জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে মামলাও সওয়াল করতে দেখা যাবে না এডুলজিকে। মামলায় এর কোনও প্রভাব পড়বে কি না তা সময় বলবে। তবে অনেকে মনে করছেন, আইনজীবী হিসাবে এডুলজির পরিচিতি রয়েছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তিনি সওয়াল করেছেন। হাঁসখালির ধর্ষণকাণ্ডে হাই কোর্টে লড়াই করে তিনি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ এনেছিলেন। এমতাবস্থায় জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে তাঁকে মামলা থেকে সরানোর সিদ্ধান্তের গুরুত্ব রয়েছে। তবে গত সপ্তাহে নিজেকে ‘মুক্ত’ বলে দাবি করার পাশাপাশি জ্যোতিপ্রিয়কে খাপছাড়া মন্তব্য, “আর চার দিন পর…’’-এর সঙ্গে আইনজীবী বদলের ঘটনার কোনও ইঙ্গিত রয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
নির্বাহী সম্পাদক