আজরাত থেকে লাইলাতুল কদর তালাশ করা বুদ্ধিমানের কাজ। লাইলাতুল কদরের নির্দিষ্টকরে কোন দিন নেই। যদি লাইলাতুল কদর পেয়ে যান তবে সে রাত্রের আমল হবে টানা ৮৩ বছর ৪ মাসের সমান। সুতারাং প্রতিরাতে আমলগুলি করতে ভুলবেননা। সময় কম যাবে… নেকীর পাল্লায় বেশি হবে। বেশি বেশি শেয়ার করুন। আপনার শেয়ারেই আরেকজন লোক জানতে পেরে আমল করতে পারবে যার কারনে তাঁর সম্পূর্ণ সাওয়াব আপনিও পাবেন।
প্রতিরাতে কোরআন শরিফ থেকে একশটি আয়াত পড়ুন তাহলে সারারাত্রিতে টানা তাহায্যুদ নামায পড়ার সাওয়াব পাবেন। (সহিহুল জামে ৬৪৬৮)
সূরা কদর থেকে সর্বশেষ সূরা নাস পর্যন্ত পড়তে পারেন। কম সময়ে অতি সহজে ১০০ আয়াত পূর্ন করতে পারবেন।
প্রতিরাতে কোরআন শরিফ থেকে দশটি আয়াত পড়ুন। তাহলে আপনার আমলনামায় কিন্তার পরিমান সাওয়াব লিখা হবে। কিন্তার হল পৃথীবি ও তার মধ্যস্থ সকল কিছুর চেয়েও শ্রেষ্ঠ। ( সহিহ তারগিব ৬৩৮)
বেশি বেশি “সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি” জিকিরটি করবেন। একবার “সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি” পাঠ করা হলো আল্লাহর রাস্তায় পাহাড় পরিমান স্বর্ণ দান করার চেয়েও উত্তম। ( সহীহ আত তারগীব ১৫৪১, তাবারানি ফিল কাবির ৭৭৯৫)
উম্মু হানি (রা) রাসূল (ﷺ) এর নিকট এসে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি বৃদ্ধ ও দুর্বল হয়ে গিয়েছি, আমাকে এমন একটি আমল শিখিয়ে দিন যা আমি বসে বসে পালন করতে পারবো। তিনি বলেনঃ ” তুমি ১০০ বার “সুব’হা-নাল্লাহ” বলবে তাহলে ১০০টি ক্রীতদাস মুক্ত করার সমপরিমাণ সাওয়াব তুমি পাবে। তুমি ১০০ বার “আল হামদু লিল্লাহ” বলবে, তাহলে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের জন্য ১০০ টি সাজানো ঘোড়ায় মুজাহিদ প্রেরণের সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে। তুমি ১০০ বার “আল্লাহু আকবার” বলবে, তাহলে ১০০টি মাকবুল উট কুরবানির সমপরিমাণ সাওয়াব তুমি পাবে।তুমি ১০০ বার “লা-ইলাহা ইল্লাহ” বলবে, তাহলে তোমার সাওয়াবে আসমান ও জমীন পূর্ণ হয়ে যাবে (এবং তোমার কোন পাপই বাকি থাকবেনা)….
#রেফারেন্সঃ মুসনাদে আহমাদ ৬/৩৪৪, সুনানু ইবনু মাজাহ ২/১২৫২,নং ৩৮১০, নাসাঈ, কুবরা ৬/২১১, মুসতাদারাক হাকিম ১/৬৯৫, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯২; আলবানী সহীহাহ ৩/৩০২,৩৯০,নং ১৩১৬।
মসজিদে ফরয নামায পড়তে গেলে বাড়ি থেকে ওযু করে যাবেন। তাহলে আপনার আমলনামায় একটি কবুল হজ্জের সাওয়াব লেখা হবে। (মিশকাত ৭২৮)
বোনেরা নিজ স্বামী,ভাই, ছেলে কিংবা আপনকোন পুরুষদের উৎসাহিত করতে পারেন।আপনিও সাওয়াব পাবেন তাহলে।
সূরা ইখলাস যতক্ষণ পারেন ততক্ষণ পড়বেন।বেশি বেশি পড়বেন… তিনবার সূরা ইখলাস (কুলহু আল্লাহু আহাদ সূরাটি) পড়লে আপনার আমলনামায় পুরো এক খতম কোরআন পড়ার সাওয়াব লেখা হবে।
(সহীহ বুখারি ৫০১৫)
প্রতিরাতে কমপক্ষে ১ টাকা করে হলেও দান করুন। ফকিরকে দিন কিংবা মসজিদে বা অন্য কোন সেক্টরে। যদি সেইরাত শবে কদর হয় তবে টানা ৮৩ বছর ৪ মাস ১ টাকা দান করার সাওয়াব লিখা হবে। আর আল্লাহ সেই একটাকাকে ৭০০ গুন কিংবা তারচেয়ে বেশি পরিমানও লিখতে পারেন। বোনেরা নিজের স্বামী কিংবা ভাইদের মাধ্যমে দান পাঠাতে পারেন।
বেশি বেশি দুরুদ পড়বেন। “সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”-একটা দুরুদ। দৈনন্দিন জিকিরগুলো পড়বেন…… যেমন, সুবাহানাল্লাহ,আলহামদুলিল্লাহ,আল্লাহু আকবার,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি ইত্যাদি পাঠ করবেন বেশি বেশি।
বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করবেন। ছোট্ট একটা ইস্তেগফার হল “আস্তাগফিরুল্লাহি ওয়াতু্ুবু ইলাইহি”।
লাইলাতুল কদরের ছোট্ট এই দোয়াটি পড়বেন।
“আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি”…
অর্থঃ হে আল্লাহ তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা পছন্দ কর।তাই আমাকে ক্ষমা করো। (আহমাদ ৬/১৮২)
প্রতিরাতে অন্ততপক্ষে দুই রাকাত করে হলেও নফল স্বলাত আদায় করুন।
প্রতিরাতে স্বলাতুত তাওবা পড়ে আল্লাহর কাছে তাওবা করুন। বেশি বেশি দোয়া করুন। বিশ্বাস রাখুন বন্ধু আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন ইন-শা-আল্লাহ।
পুনশ্চঃ আমলগুলোর জন্য নির্দিষ্টকরে কোন রাত্রি বা দিন ধরাবাঁধা নেই। যেকোন দিন বা রাত্রিতে করতে পারবেন যেহেতু রামাদানের শেষ দশদিনের যেকোন একটি রাত্রি লাইলাতুল কদর যেটা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।