দীর্ঘ ২৫ বছর পার হলেও বাংলা সিনেমার ‘স্টাইল আইকন’ খ্যাত একসময়কার তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহের মৃত্যু নিয়ে মতবিরোধ শেষ হয়নি। কয়েক দফা তদন্তে সালমানের মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হলেও তা অদ্যাবধি মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার ও অগণিত ভক্ত। সর্বশেষ ২০১৬ সালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নতুন করে তদন্তভার দেওয়া হয়।
তদন্ত শেষে গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলার ‘অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন’ দাখিল করে পিবিআই। ২৮ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনেটিতেও ৯টি কারণ দেখিয়ে শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন ওরফে সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা উল্লেখ করা হয়। এদিকে আত্মহত্যা নয়, বরং সালমান শাহকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার মা নীলা চৌধুরী। তাই তিনি প্রতিবেদনটির বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেবেন বলে জানিয়েছেন। ৩১ অক্টোবর নারাজি দেওয়ার জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
চলচ্চিত্রে তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তার মধ্যে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ বাসা থেকে সালমানের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরে সালমানকে হত্যার অভিযোগ করে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করা হয়।
জানতে চাইলে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী লন্ডন থেকে মোবাইল ফোনে বলেন, ইমন আত্মহত্যা করার মতো ছেলে ছিল না। এটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিলে জনগণ হাসবে। এটি নিছক আত্মহত্যা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যা। শিগগিরই প্রতিবেদনটির বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেওয়া হবে।
আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, পিবিআই’র দেওয়া প্রতিবেদনে নানা অসংগতি রয়েছে। আমরা অনেক তথ্য-উপাত্ত ও আলামত আদালতে উপস্থাপন করেছি। পিবিআই সেগুলো পর্যালোচনা করেনি। বরং সাজাপ্রাপ্ত আসামি যাকে (রিজভী) পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না-তাকে পিবিআই গ্রেফতার না করে তার জবানবন্দি গ্রহণ করেছে। নীলা চৌধুরী অসুস্থ। এছাড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তিনি লন্ডন থেকে দেশে আসতে পারছেন না। তিনি দেশে এলেই প্রতিবেদনটির বিরুদ্ধে নারাজি দেওয়া হবে।