জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ভারতের একটি ধর্মনিরপেক্ষ, বিকেন্দ্রীভূত এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ একীভূত জাতি গঠনের দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত। ভারতে যোগদানের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যটিতে যথেষ্ট রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক এবং সামরিক সম্পদ ব্যয় করেছে এবং আজও, পাকিস্তানের যুদ্ধংদেহি মনোভাবের কারণে জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার অন্যতম প্রধান বিষয়।
চীন ও পাকিস্তান অবৈধভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের কিছু অংশ দখল করায়, এই সমস্যাটি আরো জটিল রূপ ধারণ করেছে এবং জঙ্গিবাদের আকারে চলমান পাকিস্তানের তিন দশক পুরনো প্রক্সি যুদ্ধ এবং সাম্প্রদায়িক প্রোপাগান্ডা রাজ্য পরিচালনাকে অত্যন্ত জটিল করে তুলেছে।
যে কোনো অঞ্চলের রূপান্তর নির্ভর করে অঞ্চলটিতে বসবাসরত জনগণের কাছে উপস্থাপিত প্রতিকূলতার প্রকৃতির ওপর। প্রতিকূলতা থেকেই তৈরি হয় সম্ভাবনার এবং কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে এর অভাব নেই।
ব্লক উন্নয়ন পরিষদ এবং চলমান জেলা উন্নয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠান জম্মু ও কাশ্মীরের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করেছে, যা ভারতের তিন স্তরীয় শাসন ব্যবস্থার অধীনে স্থানীয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মূলধারার রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারতে স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন স্তরের প্রতিনিধিত্বকারী পঞ্চায়েতগুলিকে গত বছরে ২০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি তহবিল বিতরণের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হয়েছে। স্থানীয় সরকারের এই শক্তিশালীকরণের ফলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য তিনটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ)হিসেবে পুনর্গঠন করার নয়া দিল্লীর সিদ্ধান্তের পর কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীরে সর্ব-অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, দক্ষ শাসন এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক-অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে চলেছে। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের ফলে সমাজের সকল অংশের জীবনে উন্নতি হয়েছে এবং কেন্দ্র সরকার কর্তৃক প্রণীত বিভিন্ন আইন জম্মু ও কাশ্মীরে প্রবর্তন করা হয়েছে। এই আইনের মধ্যে রয়েছে নারী, শিশু এবং সুবিধাবঞ্চিতদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা ও প্রচারের জন্য প্রণীত আইনসমূহ যেমন- বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার আইন ২০০৯, কিশোর ন্যায়বিচার (শিশুদের যত্ন ও সুরক্ষা) আইন ২০১৫, মানবাধিকার সুরক্ষা আইন ১৯৯৪, তথ্য অধিকার আইন ২০০৫, সরকারী ভাষা বিল ২০২০ এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য নতুন আবাসন নিয়ম।
নির্বাহী সম্পাদক