ডেস্ক নিউজ : মৌলভীবাজারে এবার আনারসের ফলন কম। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দাম বেশি হওয়ার কথা ছিল। তবে প্রক্রিয়াজাতকরণের কোনও ব্যবস্থা না থাকায় কম দামে আনারস বিক্রি করছেন চাষিরা। একসঙ্গে পাকতে শুরু করায় আনারস চাষিরা লোকসানেই ফল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মৌলভীবাজার জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আনারসের চাষ হয়। বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিষামণি, মাইজদিহি, হোসেনাবাদ, এম আর খান, নন্দরানী, বালিশিরা, নূরজাহান, ডলুছড়া, সাতগাঁও, মোহাজেরাবাদ, মাধবপুর, মাঝেরছড়া, পুরানবাড়িসহ প্রতিটি এলাকায় প্রচুর আনারস চাষ হয়। ভরা মৌসুমে প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকে শত শত ঠেলাগাড়ি আনারস নিয়ে শ্রীমঙ্গলের বাজারে আসে। আবার কেউ জিপ গাড়িতে করেও নিয়ে আসেন। এখানে থেকে আনারস চলে যায় দেশের অন্য প্রান্তে। আনারস বাগান মালিক ও চাষি মো. সাইদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, ‘এবার শ্রীমঙ্গলে আনারসের মোটামুটি ফলন হয়েছে। তবে সব দিন দাম ভালো পাচ্ছি না। শ্রীমঙ্গলের মাটি, আবহাওয়া ও জলবায়ু আনারস চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় এখানে উঁচু নিচু পাহাড়ি টিলায় প্রচুর আনারসের চাষ হয়। তবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় পচনশীল এ ফল যখন একসঙ্গে পাকতে শুরু করে তখন কৃষকদের নামমাত্র মূল্যে অনেক সময় বিক্রি করে দিতে হয়। আনারস সংরক্ষণে শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরি। এখানে হিমাগার স্থাপিত হলে কৃষকরা পচনশীল রসালো এ ফলটি গুদামজাত করে সারা বছর বাজারজাতসহ বিদেশে রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও করতে পারতো।’ সুনামগঞ্জ থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী সাজ্জাদ মিয়া বলেন, ‘আনারসের সাইজ বুঝে দাম। ছোট পিস নিচে ১০ টাকা, আর ওপরে ২২ থেকে ৩০ টাকা। তবে আমরা ১৫-২০ জন পাইকারি ব্যবসায়ী প্রতি সপ্তাহে শ্রীমঙ্গলে আসি আনারস ও কাঁঠাল নিতে। ব্যবসা খারাপ হচ্ছে না।’ কাঁঠাল ব্যবসায়ী আসকির মিয়া বলেন, ‘বাজারে কাঁঠাল আসছে কম। মানুষ খাচ্ছে না। কম খাওয়ার কারণে সেলও কম। তেমন লাভ হচ্ছে না।’ আড়তদার নির্মল বাবু বলেন, ‘এবার আনারস বাগানে ফলন কম হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবার ফলন কম। ফলন কম হওয়ার কারণ হলো বিভিন্ন সারের ব্যবহার। কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদেরও মাঠপর্যায়ে তদারকি নাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে কোনও জ্যাম, জুস, জেলিসহ কোনও টিনজাত খাবারের শিল্প গড়ে উঠেনি। এখানে টিনজাত শিল্প গড়ে উঠলে কর্মসংস্থানসহ এলাকার চাহিদা মিটিয়ে এসব পণ্য বিদেশেও রফতানি করা যেত।’