Home » অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টিতে গর্জন বাংলাদেশের

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টিতে গর্জন বাংলাদেশের

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে নামা। তবে বলার অপেক্ষা রাখে না, জিম্বাবুয়ে ও অস্ট্রেলিয়া একই মানের দল নয়। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রাও বিষয়টি জানতেন। তবে মাহমুদউল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, নিজেরদের সেরাটা দিতে পারলে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো সম্ভব। ব্যাটিংয়ে সেই ‘সেরা’টা দিতে না পারলেও বোলারদের অসাধারণ পারফরম্যান্সে জয় দিয়েই পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। স্পিনাররা, বিশেষ করে নাসুম আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি সফরকারীরা। বাংলাদেশের ৭ উইকেটে করা ১৩১ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া নির্ধারিত ২০ ওভারে অলআউট হয় ১০৮ রানে।

আর এরই সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের শক্তির জানান দিলো বাংলাদেশ। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে অনেক- এই অপবাদ ও ব্যর্থতা থেকে বেরোনোর প্রথম ধাপটাও হয়তো ফেললো শক্তিধর অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে। তাও আবার মাত্র ১৩১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে। বলার অপেক্ষা রাখে না, জয়ের পুরো কৃতিত্বই পাবেন বোলাররা। যেখানে নাসুম ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আগের চারবারের সাক্ষাতে কোনও জয় ছিল না বাংলাদেশের। পঞ্চমবারে সফল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে না পারলেও বোলাররা স্বল্প পুঁজিতে এনে দিয়েছেন জয়ের আনন্দ। সফরকারীদের অলআউট করার পথে নেতৃত্ব দিয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা নাসুম আহমেদ। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম ৩ ওভারে পেয়েছেন ২ উইকেট। মেহেদী ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে পান ১ উইকেট। সাকিব আল হাসানও ১ উইকেট ‍পেয়েছেন ২৪ রান খরচায়।

মিরপুরে নাসুম-শো

বাংলাদেশের উইকেট উৎসবের শুরুটা করেছিলেন শেখ মেহেদী হাসান। তবে অস্ট্রেলিয়ার ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন আসলে নাসুম আহমেদ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চলেছে নাসুম-শো। এই বাঁহাতি স্পিনার একের পর এক উইকেট তুলে নিয়ে এনে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া-বধের আনন্দ।

৪ ওভারের বোলিং কোটা পূরণ করেছেন এই স্পিনার। তার বোলিং ফিগারটা এমন- ৪-০-১৯-৪। অর্থাৎ, ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। শুরুটা করেছিলেন ওপেনার জশ ফিলিপেকে দিয়ে। এরপর তুলে নেন ম্যাথু ওয়েড ও অ্যাশটন অ্যাগারের উইকেট। আর সবশেষে এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট মিচেল মার্শকে তুলে নেন।

মার্শ টিকে থাকায় অস্ট্রেলিয়া আশার আলো দেখতে পাচ্ছিল। কিন্তু নিজের শেষ ওভারে এই ব্যাটসম্যানকেও নাসুম ফেরান শরিফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ বানিয়ে। ফেরার আগে মার্শ ৪৫ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় করেন ৪৫ রান।

অস্ট্রেলিয়ার ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’

এমনিতেই বাংলাদেশের স্পিনারদের সামনে নাস্তানাবুদ, এর ওপর আবার হিট উইকেটের শিকার! এ যেন অস্ট্রেলিয়ার ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ অবস্থা। অ্যাশটন অ্যাগার পা দিয়ে আঘাত করে স্টাম্প ভাঙলে পঞ্চম উইকেট হারায় সফরকারীরা।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিক স্পিনারদের সামনে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর অ্যাগারকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন মিচেল মার্শ। সঙ্গ দেওয়া অ্যাগার উইকেট বিলিয়ে এসেছেন হিট উইকেট হয়ে।

নাসুম আহমেদের বল এতটা পিছিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন অ্যাগার যে, তার জুতার পেছনের অংশ আঘাত করে স্টাম্পে। বেল পড়ে যাওয়ায় হতাশায় পোড়ে অস্ট্রেলিয়া, আর উইকেট আনন্দে মাতে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের স্পিনে এলোমেলো অস্ট্রেলিয়া

দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং শুরুর হচ্ছে, টেলিভিশনের সামনে থাকা দর্শকেরা নড়েচড়ে বসারও সুযোগ পেলেন না। উইকেট আনন্দে মাতলেন শেখ মেহেদী হাসান। সেই শুরু, একে একে আসতে থাকলো উৎসবের উপলক্ষ। নাসুম আহমেদ হয়ে সাকিব আল হাসান। ফল, বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণে এলোমেলো অস্ট্রেলিয়া।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১১ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথম বলে উইকেট হারানোর পর ধাক্কা আরও জোরে লাগে দ্রুত ২ উইকেট হারালে। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে যে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে, সে কথা অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়রা বলে গিয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। তাই বলে এতটা হবে, সেটা হয়তো চিন্তা করেননি।

সাকিব বল তুলে নিয়েই করেছেন উইকেট উদযাপন। মোয়েসেস হেনরিকসকে বোল্ড করে তৃতীয় উইকেট এনে দিয়েছেন তিনি। অফ স্টাম্পের বল লেগ সাইডে টেনে খেলতে গিয়ে বোল্ডের শিকার এই ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে ২ বলে করেন মাত্র ১ রান।

প্রথম বলেই উইকেট

প্রথম বলেই উইকেট বাংলাদেশের। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত শুরু এনে দিলেন শেখ মেহেদী হাসান। এই স্পিনারের প্রথম বলে আউট হয়ে গেছেন অ্যালেক্স ক্যারি। এখানেই শেষ নয়, দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশ পেয়েছে আরেকটি উইকেট।

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩১ রান করেছে বাংলাদেশ। বড় স্কোর গড়তে না পারায় বোলিংয়ে দারুণ শুরু প্রয়োজন ছিল স্বাগতিকদের। সেই শুরুটা এনে দিলেন মেহেদী। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ শুরুতে তার হাতেই তুলে দিয়েছিলেন বল। বল পেয়েই বোল্ড করে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন ক্যারিকে।

তাতে কোনও রান তোলার আগেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। শুরুর ধাক্কা সামলাবে কী, দ্বিতীয় ওভারে আবার উইকেট হারিয়েছে তারা। নাসুম আহমেদের বলে ফিরে গেছেন জশ ফিলিপে। স্টাম্পিং হয়ে ফেরার আগে ৫ বলে ১ ছক্কায় করেন ৯ রান।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *