অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম শহর সিডনিতে কোভিড-১৯ লকডাউনের বিধিনিষেধ কার্যকরে সহায়তা করতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাস্তায় টহল দেওয়া শুরু করেছেন। দেশটির আরেক শহর ব্রিসবেনে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। সোমবার অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তারা দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর ব্রিসবেন ও আশপাশের কয়েকটি অঞ্চলে জারি করা তিন দিনের লকডাউন আরও পাঁচ দিন বাড়িয়েছেন।
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজধানী সিডনিতে বিদেশি এক এয়ারলাইন ক্রুর মাধ্যমে স্থানীয় এক লিমুজিন ড্রাইভার প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তারপর থেকে এ পর্যন্ত শহরটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজারে দাঁড়িয়েছে। নগরীটিতে জারি করা লকডাউন ষষ্ঠ সপ্তাহে পড়েছে।
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের কর্মকর্তারা সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। কিছু লোক লকডাউনের নিয়ম অগ্রাহ্য করার পর কর্তৃপক্ষ সিডনিতে সেনা নামিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পরীক্ষায় যাদের পজিটিভ এসেছে তারা বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন কিনা নিশ্চিত করতে বাড়ি বাড়ি যাবে শহরটিতে মোতায়েন প্রায় ৩০০ সেনাসদস্য, তারা নিরস্ত্র ও পুলিশ কমান্ডের অধীনে থাকবেন।
নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ব্রিসবেনসহ কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের দক্ষিণপূর্বাংশে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখানে স্থানীয় সময় শনিবার বিকালে জারি করা লকডাউন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা রোববার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এলাকাগুলোতে শনাক্ত হয়নি এমন আরও রোগী থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজ্যটির কর্মকর্তারা, বাসিন্দাদের কোভিড পরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
রাজ্যটিতে স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত ১৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আগেরদিন নয় জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনটি ছড়াতে শুরু করার পর বেশ কয়েকটি শহর কয়েক দিনের জন্য লকডাউন দিয়ে আবার তুলে নিয়ে ফের লকডাউন আরোপ করার চক্রের মধ্য দিয়ে যাওয়া শুরু করে। দেশটিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোক করোনাভাইরাস টিকার আওতায় না আসা পর্যন্ত এ ধরনের বিধিনিষেধ চলতেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটির ১৬ বছর ঊর্ধ্ব জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ টিকার আওতায় চলে এলে লকডাউনের ‘সম্ভাবনা কমবে’ বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় টিকার আওতায় আসা লোকের সংখ্যা ১৯ শতাংশ হলেও চলতি বছরের শেষ নাগাদ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে বলে প্রত্যাশা মরিসনের।
অন্যান্য উন্নত অর্থনীতির দেশের চেয়ে অস্ট্রেলিয়ার টিকা কর্মসূচীর গতি ধীর হলেও দেশটি তুলনামূলকভাবে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা সীমিত রাখতে সক্ষম হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার ৪০০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে আর তাদের মধ্যে ৯২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সূত্র: সারাবাংলাডটনেট
বার্তা বিভাগ প্রধান