গত বছরের ৮ মার্চে দেশে করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হন। তারপর গত বছরের জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে আগস্ট পর্যন্ত দেশে করোনার রোগীর ঊর্ধ্বগতি ছিল। এরপর শীতের সময়ে সংক্রমণ কমে এসে রোগের নিম্নগামীতা ছিল চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু এরপর থেকে দেশে করোনার ঊর্ধ্বগামীতা শুরু হয়। তবে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায় এসেছে গত দুই মাস ধরে।
বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টিকারী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটে বাংলাদেশেও দৈনিক রোগী শনাক্ত ও মৃত্যৃ বাড়ছে কয়েকগুণ। করোনার ঊর্ধ্বগতিতে চলতি মাসের দুই সপ্তাহ দেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু ঈদুল আজহা উপলক্ষে লকডাউন শিথিল করা হয়।
আর শিথিল লকডাউনের সুযোগে ঢাকা ছেড়ে গ্রামমুখী হয়েছে মানুষ। বাসে, লঞ্চে, ফেরিতে গাদাগাদি করে গ্রামে ঈদ করতে গিয়েছে। আবার শিথিল লকডাউন শেষে কঠোর লকডাউনের আগে মানুষ যেভাবে ঢাকা ছেড়েছিল, ঠিক সেভাবেই ঢাকায় ফিরেছে।
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্যরা সে সময়ে বলছেন, শিথিলতার এ নির্দেশনায় তাদের ‘সায়’ ছিল না। তারা বলছেন, সরকারের শিথিল বিধিনিষেধের এ ঘোষণা তাদের পরামর্শের উল্টো চিত্র। এ সময় এ ধরনের শিথিলতা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ারই শামিল। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিল, স্বাস্থ্য অধিদফতর যেখানে বারবার ভিড় এড়িয়ে চলার কথা বলছে, সেখানে সংক্রমণের ‘পিক টাইম’-এ এ ধরনের ঘোষণা আমাদের আরও খারাপ অবস্থায় নিয়ে যাবে।
সে আশঙ্কাকে সত্যি করে দেশে ঈদের পর থেকে দৈনিক রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর একের পর এক রেকর্ড দেখতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
আর এতে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করা তালিকায় বিশ্বে এখন দিনে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু হচ্ছে যেসব দেশে, সেই তালিকায় অষ্টম অবস্থানে বাংলাদেশ।
সর্বশেষ ১০ দিনে এক লাখ রোগী শনাক্ত হবার ধারাবাহিকতায় দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ২৩০ জন, ২৭ জুলাই ১৪ হাজার ৯২৫ জন, ২৬ জুলাই ১৫ হাজার ১৯২ জন, ২৫ জুলাই ১১ হাজার ২৯১ জন, ২৪ জুলাই ছয় হাজার ৭৮০ জন, ২৩ জুলাই ছয় হাজার ৩৬৪ জন. ২২ জুলাই তিন হাজার ৬৯৭ জন, ২১ জুলাই সাত হাজার ৬১৪ জন, ২০ জুলাই ১১ হাজার ৫৭৯ জন, ১৯ জুলাই ১৩ হাজার ৩২১ জন আর ১৮ জুলাই শনাক্ত হন ১১ হাজার ৫৭৮ জন।
এই ১৮ জুলাইতে ১১ হাজার ৫৭৮ জনকে নিয়ে সেদিন মোট ১১ লাখ তিন হাজার ৯৮৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর।
বার্তা বিভাগ প্রধান