দাবদাহে বিপর্যস্ত কানাডার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র দাবদাহে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সহস্রাধিক। কর্তৃপক্ষ বলেছে, অতিরিক্ত তাপমাত্রায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে। রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রায় ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ।
চলতি সপ্তাহে দেশটিতে ৪৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বিশেষ করে মধ্য কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার পরিস্থিতি নাজুক। সেখানকার প্রধান লিসা লাপয়েন্তে গত শুক্রবার দেশটির বাসিন্দাদের বলেন, ‘অনুগ্রহ করে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী এবং বিশেষ করে যারা একা থাকেন তাদের খোঁজ নিন’।
এদিকে দাবদাহের মধ্যেই যুক্ত হয়েছে দাবানল। এতে ঝুঁকিতে পড়েছেন বহু মানুষ। কলম্বিয়ার ফায়ার সার্ভিস একাধিক দাবানলের কথা জানিয়েছে। এরই মধ্যে পুড়ে গেছে অনেক জায়গায়। সেখানকার দমকল বাহিনীর মুখপাত্র এরিক বার্গ জানিয়েছেন, ‘দাবানল নতুন নতুন জায়গায় দেখা দিচ্ছে’। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে প্রায় ১ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
‘হিট ডোম’-এর প্রভাবে কানাডার ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বায়ুমন্ডলে সাগরের উষ্ণ বায়ু আটকে পড়লে যে উচ্চচাপ তৈরি হয় তাকে হিট ডোম বলা হয়। মারাত্মক এই তাপদাহের কারণে সেখানকার শত শত মানুষের মৃত্যুর কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ অবস্থায় নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে সরকার। প্রাপ্ত খবরে আরও জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র দাবদাহ এবং বজ্রপাত থেকে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। ১৩০টির বেশি ছোটবড় দাবানলের কারণে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রিটিশ, কলম্বিয়া প্রদেশে কমপক্ষে শতাধিক দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭৭টি সৃষ্টি হয়েছে গত দুদিনে। এগুলোর বেশির ভাগই বজ্রপাত থেকে সৃষ্টি। দাবানলের আগুন নেভাতে স্থানীয় দমকল কর্মীদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ব্রিটিশ কলম্বিয়ার প্রায় ১ হাজার বাসিন্দা দাবানল থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এখনো অনেকেই নিখোঁজ রয়েছে।
তাপমাত্রা কমার লক্ষণ না থাকায় সাধারণ মানুষকে সাবধানে চলাফেরার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বিশেষ করে পরিমাণ মতো পানি পানের কথা বলছেন চিকিৎসকরা। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে না বের হওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, সবাই প্রতিবেশীদের দিকে খেয়াল রাখুন, পরিবারের সদস্যদের খেয়াল রাখুন। বয়োজ্যেষ্ঠদের যাদের চেনেন, তাদের খোঁজ নিন। যারা শারীরিকভাবে দুর্বল, তাদের জন্য এই আবহাওয়া ভয়ানক। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে।
বার্তা বিভাগ প্রধান