Home » সিলেটে টিকটকের ফাঁদে ফেলে তরুণী ধর্ষণ, থানায় মামলা

সিলেটে টিকটকের ফাঁদে ফেলে তরুণী ধর্ষণ, থানায় মামলা

টিকটক ও লাইকি ভিডিও তৈরির ফাঁদে ফেলে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে লাইকি ও টিকটক অভিনেতা জুবের আহমেদ ফান্নি নামের এক যুবক। গত ১৯ মে জুবের তার লামাপাড়াস্থ বাসায় নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়। এসময় তাকে লিজা নামের আরেক লাইকি অভিনেত্রী সহযোগিতা করে। এব্যাপারে বাদী হয়ে শাহপরান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন কিশোরীর পিতা কামাল হোসেন। যার মামলা নং- ০১, তাং- ০১/০৬/২০২১ইং। মামলার আসামীরা হলেন, গোলাপগঞ্জ থানার বাণীগাজী গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে মো. জুবের আহমদ ও টিলাগড়ের অভিনেত্রী লিজা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জগন্নাথপুরের সোনিয়া আক্তার (ছদ্ম নাম) বেশ কিছুদিন যাবৎ লাইকি টিক টক এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। গত প্রায় মাস খানেক আগে সিলেট টিলাগড়ে বসবাসরত লাইকি অভিনেতা লিজা নামক এক মেয়ের সাথে সোনিয়ার পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে তাদের মধ্যেও বেশ বন্ধুত্বও গড়ে ওঠে। লিজার মাধ্যমে সিলেট শিবগঞ্জ লামাপাড়া মোহিনী ৮৩/এ এর বাসিন্দা আব্দুল লতীফ এর ছেলে ধর্ষক জুবের আহমেদ ফান্নির সাথে সোনিয়ার পরিচয় ঘটে। গত ঈদের পরবর্তী সময়ে জাফলংয়ে লাইকিতে শুটিংয়ের জন্য লিজা সোনিয়াকে প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি সোনিয়া তার বাবার সাথে শেয়ার করলেন সোনিয়ার বাবা লিজার সাথে ফোনে কথা বলে মেয়েকে অভিনয়ের জন্য যাওয়ার অনুমতি দেয়। গত ১৯ মে সোনিয়ার এক আত্মীয়ের বিশ্বনাথের বাসা হতে ধর্ষক ফান্নি ও লিজা তাকে একটি সিএনজি করে নিয়ে আসে। সিলেটে আসার পরে শাহপরান থানাধীন লামাপাড়া এলাকায় মোহিনী ৮৩/এ বাসার সামনে সিএনজি ব্রেক করে। ফান্নি ও লিজা সোনিয়াকে সাথে নিয়ে ওই বাসায় প্রবেশ করে। লিজা সোনিয়াকে ওই বাসায় রেখে পোশাক পরিবর্তন করার কথা বলে সে চলে যায়। এরপর ফান্নি সোনিয়াকে নাস্তা ও কোল্ড ড্রিংকস খেতে দেয়। সরল বিশ্বাসে খেয়ে সোনিয়া খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে বান্ধবী লিজা ও তার বাবাকে ফোন দেওয়ার চেষ্টা করলে ধর্ষক তার ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে প্রচুর পরিমাণে মারধর করে। এতে করে সোনিয়া নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ধর্ষক ফান্নি সোনিয়ার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং সারারাত তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। পরবর্তী দিন সকালে সোনিয়া উক্ত ঘটনা কারো কাছে যাতে না বলে সেই বিষয়ে ধর্ষক ফান্নি সতর্ক করে হুমকি ধামকি দিয়ে অসুস্থ অবস্থায় সোনিয়াকে হোটেলে নিয়ে নাস্তা করে এবং পরবর্তীতে সিএনজি করে বিশ্বনাথ সেই আত্মীয়র বাসায় সামনে নামিয়ে দিয়ে আসে। সোনিয়ার আত্মীয় তাকে অসুস্থ অবস্থায় দেখে সোনিয়ার বাবাকে ফোন করলে তার বাবা দ্রুত তাকে নিয়ে বাড়িতে যেতে বলে। সোনিয়া বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। রিক্সা চালক বাবা সারাদিন কাজ করে বাসায় এসে মেয়ের জ্ঞান ফেরার পর বিস্তারিত জেনে প্রথমে সিলেট র‌্যাব-০৯ পরবর্তীতে শাহপরান থানার সহায়তা নেন। অতঃপর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, আসক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা ও সহায়তায় সোনিয়াকে ওসমানী মেডিকেলের ওসিসি ডিপার্টমেন্টে ভর্তি করে চিকিৎসা চিকিৎসা শেষে শাহরান (রহঃ) থানায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
এব্যাপারে ধর্ষক ফান্নির মুঠোফোন ০১৭৮৫৯৫৪৮৩৭ মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে প্রথমবার খোলা পেলেও পরবর্তীতে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। যাহা বারবার চেষ্টা করার পরও আর তার ফোন খোলা পাওয়া যায় নাই।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই অঞ্জন সিংহ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন অত্র থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে। পুলিশের পক্ষ হতে আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে সকল ধরনের তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *