করোনা মহামারী ঠেকাতে ঈদ উপলক্ষে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তবে সিলেটে এই নির্দেশনা মানছেন না কেউ। বরং রাত ২ টা পর্যন্ত খোলা থাকছে দোকানপাট ও শপিংমল। ক্রেতারাও মধ্যরাত পর্যন্ত ভিড় করছেন শপিং মলে। দিন থেকে রাত পর্যন্ত নগরের প্রধান সড়কগুলোতে লেগে থাকছে তীব্র যানজট। এতে করে ঈদের বাজার জমে উঠলেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। ব্যবসায়ীদের দাবি, লকডাউনের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে গভীর রাত পর্যন্ত দোকান খোলা হচ্ছে।
ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। ঈদের জন্য নতুন কাপড় কিনতে শপিংমল, ফ্যাশন হাউজ থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। সোমবার রাতেও নগরের পোষাকের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। রাত ১ টায়ও নগরের জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া সড়কে লেগে ছিলো তীব্র যানজট। এদিকে, ঈদের শপিংয়ে স্বাস্থ্য উপেক্ষিত থাকায় করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যবিভাগের সংশ্লিস্টরা।
সোমবার নগরের জিন্দাবাজারের ব্লু ওয়াটার শপিং সিটিতে কেনাকাটা করতে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন, গত ঈদেও কাপড় কেনা হয়নি। তাই এবারের ঈদে পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছি।তিনি বলেন, দিনে চাকরির কারণে শপিং করতে পারিনি। তাই রাতে এসেছি। শপিং মলে সামাজিক দুরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
নগরের আল-হামরা শপটিং সিটি, ব্লু ওয়াটার, ওয়েস্ট ওয়ার্ল্ড, সিটি সেন্টার, হাসান মার্কেট, মধুবন, শুকরিয়া মার্কেট, লতিফ সেন্টার, কাজী ম্যানশন, শুকরিয়া মার্কেট, হকার্স মার্কেটে বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, মধ্যরাত পর্যন্ত জলছে ঈদের কেনাকাটা। শপিংমল গুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। ব্যবসা ভালো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরাও।
সিলেট নগরীর উপশহরের বাসিন্দা তাহিয়া চৌধুরী বলেন, ঈদে এবার পোশাকের দাম অনেক বেড়েছে। আর চাহিদা মতো তেমন পোশাক মার্কেটে নেই। ব্যবসায়ীরা নতুন পোশাক এবার কম নিয়ে এসেছেন। তবে বিক্রেতারা সেটি মানতে নারাজ। তাঁদের মতে, দাম আগের চেয়ে কিছুটা কম।
বন্দরবাজারে মধুবন মার্কেটে ঈদের নতুন পোশাক কিনতে আসা নাতাশা তাবাসসুম বলেন, করোনার কারণে ভেবেছিলাম অনলাইনে শপিং করবো। কিন্তু ঘরে থাকতে থাকতে দম বন্ধ হয়ে আসতেছে। তাই একটু ঝুঁকি নিয়ে একটা ড্রেস কিনতে চলে এসেছি। তবে আমি শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংয়ে এসেছি।
জিন্দাবাজারের চৌধুরী গার্মেন্টসের পরিচালক মাহবুব পলাশ বলেন, ব্যবসা ভাল হচ্ছে। ঈদ বাজার জমে উঠেছে। তবে এই ২ বছরে করোনার কারণে অনেক লোকসান হয়েছে। তাই এখন এই ঈদ বাজারে লাভ হলেও সেই লোকসান কাটিয়ে উঠা যাবে না।
ঈদ কেনাকাটায় স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, ঈদ কেনাকাটায় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এ তালিকায় ক্রেতা বিক্রেতা সবাই আছেন। তবে আমরা ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দিয়েছি স্বাস্থ্যবিধি মানতে। আমি ক্রেতা বিক্রেতা সবার কাছে অনুরোধ করবো সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন। অন্তত নিজের সুরক্ষার জন্য, পরিবারের সুরক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করেন।
প্রতিনিধি