নয়াদিল্লিঃ
দেশজুড়ে মারণ ভাইরাসের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড পরিস্থিতি। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। ভেঙে পড়েছে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। হাসপাতালে মিলছে না শয্যা, নেই পর্যাপ্ত অক্সিজেনও। ঠিক তখনই চিকিৎসা সামগ্রীর কালোবাজারিতে জেরবার হয়ে উঠেছে দেশ। শুক্রবার দিল্লি পুলিশ ‘চর্চিত’ খান মার্কেটের দুটি নামী রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে ১০৫টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। পাশাপাশি গ্রেফতারও করেছে চার জনকে।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, খান মার্কেটের দুটি প্রসিদ্ধ রেস্তোরাঁ ‘খান চাচা’ এবং ‘টাউন হল রেস্টুরেন্ট’ থেকে এগুলি উদ্ধার করা হয়। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই এই তল্লাশি অভিযানে নেমেছিল পুলিশ। ‘খান চাচা’ থেকে উদ্ধার হয় ৯৬টি এবং ‘টাউন হল রেস্টুরেন্ট’ থেকে উদ্ধার হয় ৯টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। এর মাত্র একদিন আগেই পুলিশ দক্ষিণ দিল্লির লোধি কলোনীর একটি রেস্টুরেন্ট থেকে ৪১৯টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর উদ্ধার করেছিল। যা থেকে বোঝা যাচ্ছে দিল্লির সংকটজনক করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কালোবাজারির বাড়বাড়ন্তের বিষয়টি আরও একবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
এই পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে খান মার্কেটে কালোবাজারির এই চাঞ্চল্যকর তথ্যের কথা। এও জানা যাচ্ছে, এই উদ্ধার হওয়া অক্সিজেন কনসেনট্রেটর গুলির বড় অংশ আমদানি করা হয়েছে চিন থেকে। পাঁচ লিটার থেকে নয় লিটারের এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর গুলি ১৬ হাজার এবং ২২ হাজারে কিনে এনে এখানে বিক্রি করা হচ্ছিল ৫০ থেকে ৭০ হাজারে। দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) আরও জানালেন যে, এগুলি গত বছরের অক্টোবর মাস থেকেই আমদানি করা হচ্ছিল। এরপর চলতি বছরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের চাহিদা আরও বেড়ে যাওয়ায় ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমদানির পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। অভিযুক্তরা এই কংসেনট্রেটর গুলি বিক্রির জন্য অনলাইন পোর্টালও ব্যবহার করছিল। তার প্রচার চলছিল হোয়াটসঅ্যাপেও। এদিনের এই তল্লাশি অভিযানে উদ্ধার হয় থার্মাল স্ক্যানার সহ এন-৯৫ মাস্কও।
প্রসঙ্গত, টানা তিনদিন দেশে মারণ ভাইরাসের রোজকার সংক্রমণ ৪ লক্ষের গণ্ডি পার করছে। অর্থাৎ চলতি মাসে এই নিয়ে মোট চারবার দেশে রোজকার আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লক্ষ ছাড়াল। এদিন বৃহস্পতিবারের থেকে দৈনিক সংক্রমণ কিছুটা কমলেও দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লক্ষ ১ হাজার জন। ফলে দেশে বর্তমানে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৭ লক্ষ ২৩ হাজার ৪৪৬। শেষ ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী ভাইরাসের শিকার হয়েছেন ৪ হাজারেরও বেশি। এখনও পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃত্যু বেড়ে দাঁড়াল ২ লক্ষ ৩৮ হাজার। পাশাপাশি দেশে এই নিয়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২ কোটি ১৯ লক্ষের কাছাকাছি।
নির্বাহী সম্পাদক