আইলারে নয়া দামান আসমানেরও তেরা/ বিছানা বিছাইয়া দেও শাইল ধানের নেড়া/ দামান বও দামান বও।’ সিলেটী আঞ্চলিক ভাষায় প্রচারিত গানটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। এই পুন:জাগরণের নেপথ্যে রয়েছেন সিলেটেরই এক তরুণী। গানের সঙ্গে সেই তরুণীও এখন সবার পরিচিত। তিনি তসিবা বেগম।
সদ্য এইচএসসি পাস করেছেন তসিবা। গান গাইতে ভালো লাগলেও শেখা হয়নি কখনো। তবে দরদ দিয়ে গাওয়ায় তার গান সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। সিলেট অঞ্চলে গীত হয়ে আসা ‘নয়া দামান’ গানে এখন মজেছে সবাই। তবে ভাইরাল হওয়া গানটি নিয়ে তসিবার রয়েছে বিস্তর অভিযোগ ও আক্ষেপ।
তসিবা জানান, ৭-৮ মাস আগে থেকে টিকটক ব্যবহার শুরু করেন। টিকটকে পছন্দের কিছু গানের ২-৩ লাইন গেয়ে দ্রুত টিকটকে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজের তিন চিকিৎসকের নাচের সেই ভাইরাল ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে তসিবার গাওয়া গানটি।
তসিবা বলেন, ‘প্রায় দুই মাস আগে নয়া দামান গানের দুই লাইন গেয়ে টিকটকে দিয়েছিলাম। অনেক মানুষ এটা পছন্দ করেছেন এবং আমাকে ধন্যবাদও দিয়েছেন। এটি দেখে মুজা ভাই (প্রবাসী মিউজিশিয়ান মুজা) আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তার সঙ্গে এই গানটি করার প্রস্তাব দেন। আমি এতে সম্মত হই।’
মাসখানেক আগে নয়া দামান গানের ‘মুজা ফিচারিং তসিবা ভার্সন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেন মুজা। এরপরের গল্প তো সবার জানা। নেটিজেনদের মাঝে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়।
তসিবা জানান, এই গানের সঙ্গে খুলনার এক কনের নাচের ভিডিও ধারণ করে ইউটিউবে আপলোড করে ছায়াছবি নামের একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান। সেই ভিডিও দেখেছেন কোটি খানেক দর্শক। আর করোনা রোগীদের সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের উৎসাহ দিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের তিন চিকিৎসকের নাচের ভিডিও তো সবার মোবাইলে মোবাইলে।
আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অনেকেই বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় গানটি গাইছেন, যা খুব খারাপ লাগছে। গানটির ভাষা অরিজিনাল সিলেটী, সেজন্য গানটি সিলেটি ভাষাতেই সুন্দর। আমি চাই যেই গান করুক না কেন, গানের ভাষা যেন চেঞ্জ না করা হয়। আর আমাদেরকে যদি ভালো গানের সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে ভালো গান গাইতে পারবো।
গান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তসিবা বলেন, আমি সিলেটের পুরোনো গানগুলো গাইতে চাই। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে সিলেটের গানের বিপুল ভান্ডার তুলে ধরতে চাই। তবে ঠিক রাখতে চাই মূল সুর ও কথা, যাতে এগুলো বিকৃত হতে হতে হারিয়ে না যায়।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, টেলিভিশনে নিউজ হয়েছে কিন্তু আমার নাম সেভাবে বলা হয়নি। বলা হয়েছে, ছায়াছবি নাকি গানটি বিখ্যাত করেছে। অথচ ছায়াছবি আমার গান ব্যবহার করেছে।
প্রতিনিধি