শিরোনাম শুনে হয়তো ভাবছেন যে এটি আসলে একটি মজার ঘটনা। কিন্তু না, ১৮১৪ সালের ১৭ অক্টোবর ঘটে যায় অন্যতম ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনা। এরই নাম ‘লন্ডন বিয়ার ফ্লাড’। সেই বন্যায় আবার প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ৯ জন। এছাড়াও ওই এলাকায় বহু ঘরবাড়ি ও স্থাপনার ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছিল।
লন্ডনের গ্রেট রাসেল স্ট্রিট ও টটেনহ্যাম কোর্ট রোডের সংযোগস্থানে অবস্থিত ছিল বিখ্যাত মদ তৈরির কারখানা যার নাম হর্স সু ব্রেওয়ারি। সেই কারখানাটির আকৃতি ছিল বেশ বড়ো। বেশ কয়েকটি ২২ ফুট উঁচু কাঠের ফার্মেন্টেশন ট্যাংকে মদ গাঁজানোর কাজ করা হতো।
বিয়ার উৎপাদনের জন্য হর্স সু ব্রেওয়ারি ছিল বেশ বিখ্যাত। কারখানাটির সবগুলো ফার্মেন্টেশন ট্যাংকে সব মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ৫০০ ব্যারেল বিয়ার ভরা যেত। তবে এখানে একটি বিশেষ মতো ব্যাপার হলো যে প্রতিটি কাঠের তৈরি ফার্মেন্টেশন ট্যাংককে সাপোর্ট দিতে এর চারপাশে লোহার রিং ব্যবহার করা হতো।
এর উদ্দেশ্য ছিল ভেতরের বিপুল পরিমাণ বিয়ারের ভারে কাঠের ট্যাঙ্কগুলো যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এরকমই একটি আয়রন রিং থেকে সেদিনের সেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
একটি ফার্মেন্টেশন ট্যাংককে ঘিরে থাকা লোহার রিং বহুদিনের ব্যবহারের ফলে হঠাৎ খুলে যায়। এর ফলে এক ঘণ্টার মধ্যে সেই ট্যাংকে মজুদ থাকা সবটুকু বিয়ার বাইরে বেরিয়ে ভেসে যায় এবং আরো কিছু ফার্মেন্টেশন ট্যাংককে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
এর পাশাপাশি আবার ওই কারখানাটি উপচে ওঠে। প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার গ্যালন বিয়ার ওই কারখানার দেওয়ালে আছড়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছিলো। সেই চাপে দেওয়ালগুলো রীতিমতো ভেঙ্গে দিয়ে রাস্তায ভাসিয়ে দেয় তা। এর ফলে ওই রাস্তার আশেপাশে থাকা বস্তিগুলো বিয়ারের স্রোতে ভেসে যায়।
বিয়ারের একেকটি ঢেউ ছিল প্রায় পনেরো ফুট মতো উঁচু। তবে ফ্রী বিয়ারের লোভ সামলাতে না পেরে এমন বিপদের দিনেও সেদিন লন্ডনের বাসিন্দারা বালতি গামলা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন রাস্তায় বিয়ার সংগ্রহ করতে।
নির্বাহী সম্পাদক