সারা দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে৷ এর মধ্যেই সামনে এসেছে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষণায় উঠে এসেছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের শরীরে করোনাভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি৷ তার কারণ, মহিলাদের শরীরে বেশি পরিমানে অ্যান্টিবডি রয়েছে। মুম্বই সেরো সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী মহিলাদের শরীরে ৩৭.১২ শতাংশ এবং পুরুষদের শরীরে ৩৫.০২ শতাংশ অ্যান্টিবডি রয়েছে৷
পুরুষ ও মহিলাদের শরীরে কোভিড সংক্রমণ নিয়ে এমন নানা সমীক্ষা-গবেষণা হয়ে চলেছে সারা পৃথিবী জুড়ে। এবং তারা প্রত্যেকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে করোনা একটু বেশি-ই ভয়ানক হয়ে উঠছে। মহিলারা এই ভাইরাসের প্রকোপ কাটিয়ে সেরে উঠলেও পুরুষদের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই ফলাফল আশঙ্কাজনক হয়ে উঠছে। দেখা যাচ্ছে মহিলাদের টিকার যে ডোজ দেওয়া হচ্ছে পুরুষদের ক্ষেত্রে তা আরও বাড়াতে হচ্ছে। এর একটাই কারণ, মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। বয়স্ক পুরুষদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি একই বয়সী মহিলাদের থেকেও কম বলে জানা যাচ্ছে গবেষমায়।
বিশ্ব জুড়ে মহিলাদের তুলনায় বাড়ছে পুরুষের মৃত্যুর হারও। চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি গবেষণা করে দেখেছেন, করোনার ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে মহিলরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়ার ক্ষমতা রাখে। ACE2 প্রোটিন সেল SARS-COV-2-তে মহিলাদের কম ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এর নেপথ্যে রয়েছে লিঙ্গভেদে শারীরিক গঠন এবং হরমোনের প্রতিক্রিয়া। গবেষকদের বক্তব্য এই যে, নারীশরীরে টাইপ ১ ইন্টারফেরন প্রোটিনের উৎপাদন বেশি হয়। এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ ইমিউনিটি সিস্টেমের অস্বাভাবিক দুর্বলতা, যাকে সাইটোকিন স্ট্রম বলা হয়, তা প্রতিহত করে। ফলে করোনাভাইরাস মহিলাদের শরীরের ক্ষতি কম করতে পারে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের শরীরে টিকা প্রয়োগে খুব শীঘ্রই ফল মিলছে।
পুরুষদের মধ্যে বেশি সংক্রমণের কারণ হিসেবে গবেষকদের দাবি, মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের টি-কোষের সক্রিয়তা কম। বিশেষত, ভাইরাসের মোকাবিলা করতে মহিলাদের টি-কোষ যতটা সক্রিয়, পুরুষদের ততটা নয়। অথচ এই টি-কোষই শরীরের রোগ প্রতিরোধের মূল অস্ত্র। এই কারণেই পুরুষদের ক্ষেত্রে করোনায় মৃত্যু ঝুঁকি বেশি থেকে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পুরুষেরা অতিরিক্ত সাইটোকাইন তৈরি করতে পারে। এটি এক ধরণের প্রদাহজনক প্রোটিন, যা শরীরের অন্য প্রতিরোধী বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়।
নির্বাহী সম্পাদক