সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে গৃহবধূ আজমিনা আক্তার হত্যাকান্ড রহস্যেঘেরা চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। জানা গেছে, হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি গোলাপ মিয়ার সঙ্গে সুন্দরী পুত্রবধুর সম্পর্ক তৈরিতে সহযোগিতা করতেন নিহত আজমিনার শাশুড়ি! ছেলে কৃষক শাহনুর মিয়া কৃষি শ্রমিক হিসাবে বাহিরে কাজ করতে গেলে গোলাপ মিয়াকে বাড়িতে ডেকে আনতেন আজমিনার শাশুড়ি হেলেনা বেগম।
গত মঙ্গলবার রাতে হেলেনা বেগমের সহযোগীতায় ধর্ষিত হন আজমিনা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্ষক গোলাপকে জুতাপেটা করেন আজমিনা।
এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে আজমিনার মাথায় টিউবওয়েলের (লোহার) হাতল দিয়ে আঘাত করে গোলাপ। ঘটনাস্থলেই আজমিনার মৃত্যু হয়।
এসময় সাহরির সময় ঘনিয়ে এলে লাশ গুমের চেষ্টার পর ব্যর্থ হয়ে গোলাপ ও তার সহযোগীরা। পরে শাশুড়ি হেলেনার সহযোগিতায় রাতেই বাড়ির পাশে খড়খুটো দিয়ে আজমিনার মরদেহ ফেলে রেখে চলে যায় গোলাপ ও তার সাথে থাকা অন্য সহযোগীরা।
আজমিনা হত্যা রহস্য উদঘাটনের পর শুক্রবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-৯ সিলেট সিপিসি ৩ সুনামগঞ্জ ক্যাম্পের উপ-পরিচালক লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ।
উল্লেখ্য,গত বুধবার সকালে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের জামবাগ জৈতাপুর গ্রামের কৃষক শাহনুর মিয়ার স্ত্রী আজমিনার রক্তাক্ত লাশ খড়খুটো দিয়ে ঢাকা রাখা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের শশুর আমির হোসেন আমিরুল কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বুধবার রাতে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার একদিন পরেই তথ্য-প্রমাণাদির সাপেক্ষে আজমিনার শাশুড়িসহ তিন আসামিকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতাররা হলেন,হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের জামাবাগ জৈতাপুর গ্রামের মৃত নাজির হোসেনের ছেলে গোলাপ মিয়া, তার সহযোগী একই গ্রামের আকরম আলীর ছেলে সোহাগ মিয়া ও নিহত গৃহবধুর শাশুড়ি হেলেনা বেগম।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃতদের র্যাব তাহিরপুর থানায় সোর্পদ করেছে।
পুলিশ জানায়, এটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। মঙ্গলবার গভীর রাতে লোহার তৈরী টিউবওয়েলের ভারী হাতল দিয়ে আজমিনার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করে ঘাতকরা। এরপর খড়খুটো দিয়ে লাশ ঢেকে রেখে যায়। আজমিনা হত্যায় আসামিরা তাদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ বলেন,হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি গোলাপ গ্রামের প্রভাবশালী ও লাঠিয়াল। দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে আজমিনার শাশুড়িরকে টাকা-পয়সার লোভ দেখিয়ে এই সম্পর্ক তৈরি করে।শাশুড়ির সহযোগিতায় ইতিপূর্বে কয়েকবার দুই শিশু সন্তানের জননী আজমিনাকে ধর্ষণ করে গোলাপ
মঙ্গলবার আজমিনাকে হত্যার পর লাশ গুমের ঘটনায় সরাসরি সহযোগিতা করেন আসামী হেলেনা বেগম, গোলাপের সহযোগী সোহাগ মিয়া সহ আরো কয়েকজন।
তিনি আরো বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে এর আগেও ওই শাশুড়ি টাকা পয়সা খেয়ে বিভিন্ন মেয়েকে ভোগের সুযোগ তৈরী করে দেয় গোলাপকে।
শুক্রবার রাতে তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদার জানান,হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত জব্দ করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ ও র্যাব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রতিনিধি