বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করলেও এখনও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য পরিবেশন করছে রাজধানীর বিভিন্ন নামিদামি হোটেল রেস্টুরেন্টগুলো। মিরপুরের বেশ কয়েকটি নামিদামি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানায় পড়তে হয় তাদের।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) কাচ্চি ভাই, রাব্বানী হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, ধানসিঁড়ি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট, হাজী নান্না বিরিয়ানিকে অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন, বিএসটিআই অনুমোদনহীন পণ্য রাখার দায়ের বিভিন্ন অংকের জরিমানা করা হয়েছে।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযানে বিভিন্ন অসঙ্গতি পাওয়া যায় এসব রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করা হয়।
শনিবার রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর থেকে শুরু হওয়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় আদালতের নজরে আসে, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার তৈরি হচ্ছিল কাচ্চি ভাই-এ। খাবার তৈরির সময় হাতে ছিল না গ্লাভস। এছাড়া বিএসটিআই অনুমোদনহীন ঘি, সস, বোরহানি মজুদের বিষয়টিও নজরে আসে আদালতের। এসব কারণে ভোক্তা অধিকার আইনে ৫২ ধারায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত মিরপুর এক নম্বরে ধানসিঁড়ি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে। আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন জিনিসপত্র সরাতে শুরু করে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরাসরি হোটেলের কিচেন রুম এ চলে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান ইফতারের বিভিন্ন অবিক্রিত আইটেম খোলা ফেলে রাখা হয়েছে। রুমটি ছিল স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় । দু-একদিন আগের রান্না করা সামগ্রী আজও বিক্রি করা হতো। এছাড়াও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে চলছিল খাবার তৈরির কাজ। বেশ কয়েকটি অভিযোগে ধানসিঁড়ি হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া মিরপুর ১০ নম্বর এলাকার বেনারসি পল্লীতে রাব্বানী হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টকে রান্নাঘর অপরিচ্ছন্ন থাকা, বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন বিভিন্ন খাদ্যপণ্য (বোরহানি, ফিরনি) রাখার দায়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় রেস্টুরেন্ট থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়।
এ সময় বেনারসি পল্লীতে হাজী নান্না বিরিয়ানি নামক রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন কিচেন রুম সহ বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেন। বিএসটিআই এর অনুমোদন বিহীন পণ্য সামগ্রী থাকায় তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযান শেষে ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিষা রানী কর্মকার বলেন, আমরা বেশ কয়েকটি অভিজাত রেস্টুরেন্টের কিচেন পরিদর্শন করি। আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় খাবার তৈরির কাজ চলছিল। তিনি বলেন, যেসব রেস্টুরেন্টকে জরিমানা করা হয়েছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এর আগেও একই কারণে তাদের জরিমানা পড়তে হয়েছে। একাধিকবার জরিমানা দিয়েও আগের মতই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
বার্তা বিভাগ প্রধান