Home » শেষ ইচ্ছা পূরণ হলেও বসা হলো না সভাপতির চেয়ারে

শেষ ইচ্ছা পূরণ হলেও বসা হলো না সভাপতির চেয়ারে

সংসদীয় আসন থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন, তবে আক্ষেপ ছিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি না হওয়ার। সর্বশেষ নির্বাচনে জয় পেয়ে শেষ ইচ্ছা পূরণ হয়। তবে সভাপতির নির্ধারিত আসনে বসা হলো না আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যডভোকেট আবদুল মতিন খসরুর।

মতিন খসরু সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২১-২০২২ সেশনে প্রথমারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন। করোনাকে পরোয়া না করে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। সমিতির নির্বাচনের আগে গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে মতিন খসরু বলেছিলেন, ‘পাঁচবার এমপি (সংসদ সদস্য) হয়েছি, আইনমন্ত্রী হয়েছি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি হতে পারিনি। আগেও সভাপতি (দু’বার) পদে দাঁড়িয়েছি, জিততে পারিনি, এবার ভোট দেবেন…। আমার জীবনের এটাই শেষ ইচ্ছা।’

গত ১০ ও ১১ মার্চ দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এবারের নির্বাচনে মোট সাত হাজার ৭২২ জন ভোটারের মধ্যে দুইদিনে পাঁচ হাজার ৪৮৬ জন আইনজীবী ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন মতিন খসরু।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদ্য সাবেক সভাপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, অন্যান্য সবক্ষেত্রে বারবার নির্বাচিত হলেও সমিতির সভাপতি পদে তিনি নির্বাচিত হতে পারেননি বলে আক্ষেপ করতেন। আইনজীবীরা ভেবেছিলেন, তাকে নির্বাচিত হরা হলে বারের উন্নয়ন হবে। কিন্তু আমরা আমাদের একজন বিজ্ঞ সদস্যকে হারালাম। তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

গত ১২ এপ্রিল নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত উপকমিটির আহ্বায়ক ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাবেক বিচারপতি এ এফ এম আবদুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন। এরপর নবনির্বাচিত সদস্যদের পরিচিত করানোর মাধ্যমে নতুন কমিটির কাছে দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়।

দায়িত্ব গ্রহণের সময় করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকায় উপস্থিত ছিলেন না সমিতির সভাপতি আবদুল মতিন খসরু। তবে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) শেষবারের মতো তার মরদেহ কর্মস্থলে পৌঁছায়। জানাজা শেষে কর্মস্থল থেকে শেষবারের মতো তার প্রস্থান ঘটে। শূন্য পড়ে থাকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি কক্ষের নির্ধারিত আসনটি।

সমিতির সদ্য নির্বাচিত কার্যনির্বাহী সদস্য মাহফুজুর রহমান রোমান বলেন, বারের ইতিহাসে এমন ঘটনা আর ঘটেনি। তার আক্ষেপ ছিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হওয়ার। তার সেই ইচ্ছাপূরণ হয়েছিল। তাকে সভাপতি নির্বাচিত করতে পেরে আমরা তাকে সম্মানিত করতে পেরেছি। একটিবারের জন্য হলেও তিনি তার (সভাপতি) চেয়ারে বসলে হয়তো আমাদের আর কোনও আক্ষেপ থাকতো না।

আবদুল মতিন খসরু গত ১৫ মার্চ সংসদ সচিবালয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দেন। ১৬ মার্চ সকালে তার রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। ওইদিনই তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। পরে বুধবার বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। আব্দুল মতিন খসরু ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তিনি ১৯৫০ সালে কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *