Home » আজ থেকে লকডাউন

আজ থেকে লকডাউন

করোনার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সাত দিনের লকডাউন শুরু হচ্ছে সোমবার থেকে। সরকারের দেওয়া নির্দেশনা কার্যকর হবে ভোর ৬টা থেকে।

নাগরিকদের জন্য নির্দেশনার একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। তালিকানুযায়ী কিছু কাজ করা যাবে, কিছু করা যাবে না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শাফায়াত মাহবুব চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে যা যা বলা হয়েছে-

১. এই সাতদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না।

২. জরুরি ওষুধ কিংবা একান্ত প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া আর কিছু কিনতে বাইরে যাওয়া যাবে না। কাজ শেষে দ্রুত বাসায় ফিরতে হবে।

৩. দাফন বা সৎকারের কাজে বাইরে যাওয়া যাবে।

৪. সকল গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। ব্যক্তিগত যানবাহনও চালানো যাবে না। মোটরসাইকেল ও অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচল করা যাত্রীবাহী বিমানও চলবে না। পণ্যবাহী ও উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত পরিবহন এ নির্দেশের আওতায় পড়বে না। এ ছাড়া যারা বিদেশে যাবেন, অথবা যারা বিদেশ থেকে এসেছেন, তারা যাতায়াতের ক্ষেত্রে যে পরিবহন ব্যবহার করবেন তা এ নির্দেশের আওতায় পড়বে না।

৫. এই সাত দিন রেস্তোরাঁ খোলা রাখা যাবে। তবে ভেতরে বসিয়ে কোনও ক্রেতাকে খাবার পরিবেশন করা যাবে না। খাবার প্যাকেট করে নিয়ে যাওয়া যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার ডেলিভারি করা যাবে।

৬. দোকান ও শপিংমল বন্ধ থাকবে। তবে অনলাইনে কেনাকাটা ও ডেলিভারির সুযোগ থাকবে। এ কাজে নিয়োজিত কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কোনও ক্রেতা সশরীরে শপিংমলে যেতে পারবেন না।

৭. আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং জরুরি সেবা যেমন স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, সমুদ্র, স্থল ও নৌ বন্দরগুলোর কার্যক্রম চলবে। টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাক বিভাগসহ অন্যান্য জরুরি পণ্য ও সেবার সঙ্গে সম্পর্কিত অফিস, তাদের কর্মী ও যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।

৮. চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, সবজি, মাছ-মাংস ইত্যাদি কিনতে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাঁচাবাজারে যাওয়া যাবে। বিকাল চারটার পর এসব দোকান ও বাজার বন্ধ করতে হবে। ক্রেতাকেও ঘরে ফিরতে হবে। কাঁচাবাজার খোলা জায়গায় নির্ধারিত দূরত্বে বসবে।

৯. ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা যাবে। এক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। ওষুধের দোকানে একসঙ্গে একজনের বেশি ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। তবে দোকানের আয়তনের ওপর ভিত্তি করে দুজন ঢুকতে পারবেন। এর বেশি নয়।

১০. জরুরি কাজের জন্য সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আদালত খোলা থাকবে। তবে জরুরি কাজের জন্য যাদের প্রয়োজন তাদেরকেই অফিসে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

১১. গার্মেন্টস ও কারখানা খোলা থাকবে। কারখানার নিজস্ব গাড়িতে শ্রমিকদের আনতে হবে। কাজ শেষে পৌঁছে দিতে হবে। কারখানার গাড়ির ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না। কারখানার কাছাকাছি এলাকায় শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে। সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে মালিকদের নিজ উদ্যোগে।

১২. ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেন চালাতে সারা দেশেই ব্যাংক খোলা থাকবে। তবে তা সীমিত সময়ের জন্য। ৫-১১ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকিং লেনদেনের সময়সূচি সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লেনদেন পরবর্তী কাজে প্রয়োজনে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

১৩. এই সময়ে দেশের সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ রাজধানী ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করবে।

১৪. নির্দেশনা মানার ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে স্থানীয় প্রশাসন। পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা পাড়া-মহল্লায় সার্বক্ষণিক টহল দেবেন। সরকারি আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে নির্দেশনায়।

এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য এই নির্দেশনা জারি হয়েছে। এটি পালন করা গেলে হয়তো করোনা মহামারি থেকে এ যাত্রা রেহাই পাবো।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *