শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোর:
রমজান উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। কিন্তু রমজানের প্রথম দিন সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত দামে কোথাও মাংস পাওয়া যায়নি। বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছেমতো দামেই মাংস বিক্রি করছেন। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। উত্তর সিটি কর্পোরেশন এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনও বৈঠকই করেনি। তবে সংস্থাটি বলছে ডিএসসিসি নির্ধারিত দাম তাদের এলাকাতেও বলবৎ থাকবে। গত সোমবার নগর ভবনে মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেন। সে অনুযায়ী প্রতিকেজি দেশি গরুর মাংসের দাম ৪৫০ টাকা। বিদেশি বা বোল্ডার জাতীয় গরুর ও মহিষের মাংসের দাম ৪২০ টাকা। ছাগলের মাংসের দাম ৬০০ টাকা ও খাসির মাংস ৭২০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত দামের চেয়ে ২০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে মাংস বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার (১৮ মে) প্রথম রোজার সকালে দক্ষিণ বনশ্রীর কাজিবাড়ি এলাকায় মাংস বিক্রি হয় ৫০০ টাকা দরে। সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের গরুর দাম বেশি। ওই দামে বিক্রি করলে লস হবে।’ সিটি কর্পোরেশন থেকে নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও বেশি দামে মাংস বিক্রি করার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহানপুরের ব্যবসারী রফিক মোল্লা বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সেই দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাছাড়া, তাদের কোনও নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি। ৪৮০ টাকার নিচে আমরা মাংস বিক্রি করতে পারবো না।’ একই অবস্থা দেখা গেছে, খিলগাঁও এলাকার তিলপাড়া এলাকায়। ওই এলাকায় মাংস বিক্রি হয়েছে ৪৮০ টাকা দরে। মেরাদিয়া, দক্ষিণ বনশ্রী, রামপুরা, খিলগাঁও, মালিবাগ, শান্তিনগর, নাজিরাবাজার, ইংলিশ রোড ও গুলশান বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীদের অনেক বেশি দামে মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে। মাংসের দামের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেরাদিয়ার বাসিন্দা মাসুমা আক্তার বলেন, ‘মেয়র বা সিটি কর্পোরেশন কথা তো কোনও ব্যবসায়ীই মানছে না। যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে পারে তাহলে মিডিয়ায় দাম নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়ার দরকার কী ছিল? মেয়রের উচিৎ মাংসের দাম নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।’ এ অবস্থায় সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের মনিটরিং টিম কাজ করছে। তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। ব্যবসায়ীরা না মানলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, সিটি কর্পোরেশন যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা যৌক্তিক নয়। কর্পোরেশন দাম নির্ধারণ করে দিতে পারে না, এই দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। এই দামের সঙ্গে বাস্তবতার কোনও মিল নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শেখ সালাহউদ্দীন বলেন, ‘বাজারে আমাদের মনিটরিং টিম কাজ করছে। সেভাবে কেউ অভিযোগ করছে না। আমরা যখন দোকানে যাই তখন দেখি নির্ধারিত দামেই বিক্রি হচ্ছে। চলে আসলে চিত্র উল্টো হয়ে যায়। আজ আমাদের টিম মাঠে নেমেছে। কাল থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী এক দুই দিনের মধ্যে নির্ধারিত দামেই মাংস বিক্রি করতে হবে।’ ব্যবসায়ীরা বাড়তি লাভের জন্য বেশি দাম নেয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।