Home » কোভিড-১৯: করোনাভাইরাসের নতুন ধরন সিলেটে

কোভিড-১৯: করোনাভাইরাসের নতুন ধরন সিলেটে

যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরা প্রবাসীদের মধ্যে ছয়জনের শরীরে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট- আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এস এম আলমগীর। যে ছয়জনের শরীরে করোনার নতুন ধরণ শনাক্ত হয়েছে তাদের মধ্যে অন্তত একজন রয়েছেন সিলেটের। যিনি সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন।

বুধবার দুপুরে আইডিসিআরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের যে ধরন খুব দ্রুত সংক্রমণ হচ্ছে শনাক্ত করা ধরনটি সেটিই।

সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুগদা হাসপাতালের সেবা সপ্তাহ উদ্বোধনে দেশে দুইজনের শরীরে নতুন ধরন পাওয়ার কথা জানান।

দুপুরে সাংবাদিকদের আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা দেশে যুক্তরাজ্যের সেই করোনাভাইরাসের নতুন ধরন নিয়ে বিস্তারিত জানান।

আলমগীর বলেন, ‘জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আমরা বেশ কয়েকটি ইউকে ভ্যারিয়েন্ট আইডেন্টিফাই করি। ইউকে-তে যে ভ্যারিয়েন্ট, তার হুবহু ছিল। এই পেশেন্টরা আমাদের তত্ত্ববধানে ছিলেন, আমরা তাদের আইসোলেশনে রেখেছি। ইউকের মতো আমাদের এখানে স্প্রেডিং দেখিনি।

‘পৃথিবীর ৮০টি দেশে এটি দেখা গেছে। পৃথিবীর বহু দেশে সংক্রমণ যে বেশি হয়েছে, বিষয়টি এমন না। ইউকের মতো কোথাও হয়নি। আমাদের এই অঞ্চলে সেরকম স্প্রেডিং ক্যাপাসিটি অর্জন করে নাই বলেই আমাদের ধারণা।’

নতুন ধরনটি দেশে ছড়ানোর বিষয়ে কোনো গবেষণা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ইউকে থেকে যারা আসছে তাদের প্রত্যেতকে টেস্ট করিয়ে যাদের পজেটিভ আসছে, তাদের স্যাম্পল সিকুয়েঞ্চিং করছি। এটা করেই আমরা কয়েকটি পেয়েছি।

‘সেটা অব্যাহত রয়েছে। কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করে যাদের কন্ট্রাক্টে এসেছে তাদের ফলোআপে ১৪ দিন রেখে আমরা রেপিডেট টেস্ট করিয়েছি। তেমন কিছু পাইনি। আমরা এই ভ্যারিয়েন্টটির সংক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছি।’

আলমগীর বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৫-৬ জনের কথা বলা হচ্ছে। আমাদেরকে অনেকজনের কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করতে হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত কন্ট্রাক্টের মাঝে কোনো কেস পাইনি।’

যুক্তরাজ্যফেরতদের নমুনা সাত দিন পর পর পরীক্ষা করা হয় জানিয়ে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, ‘যারই পজিটিভ পাওয়া যায়, তারই সিকুয়েঞ্চিং করছি। নতুন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করে নিয়মিত ফলোআপ করছি।

‘টোটাল ৬ জনের মধ্যে পেয়েছি। তারা সবাই ইউকে থেকে ফেরা। তারা ঢাকায় ও সিলেটে অবস্থান করছেন।’

বাংলাদেশে যে ভ্যাকসিন দিচ্ছি এতে তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না। আমরা যে ভ্যাকসিন দিচ্ছি, ব্রিটেনেও সেটা ব্যাপকহারে দেয়া হচ্ছে। ভ্যাকসিন যথাযথভাবেই কার্যকর রয়েছে, বলেন তিনি।

নতুন ধরন নিয়ে বড় পরিসরে গবেষণার পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রথম কাজ হলো, ‘বাংলাদেশে ঢুকছে কি না? আমরা সেটা করে যাদের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে, সেটা শনাক্ত করে কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

এখন যে দেশে সংক্রমণ বাড়ছে, এতে ইউকে ভ্যারিয়েন্টের কোনো প্রভাব নেই বলেও জানান এই কর্মকর্তা। বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানছি না, যে কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি সবাইকে মানতে হবে।’

যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন ধরনটি শনাক্ত হয় ২০২০ সালের নভেম্বরে। এটি ৪০ থেকে ৮০ শতাংশ বেশি সংক্রামক বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *