অনলাইন ডেস্ক: চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মারকাযুল কুরআন ইসলামিক একাডেমির হেফজ বিভাগের এক শিশু শিক্ষার্থীকে মায়ের কাছে যাওয়ার অপরাধে নির্মমভাবে পিটিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষক। নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) থেকে হাজার হাজার মানুষ ওই ভিডিও শেয়ার করেন। এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা গ্রামের মারকাজুল কোরআন ইসলামিক একাডেমিতে অভিযান চালিয়ে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মো. ইয়াহইয়াকে আটক করে পুলিশ।
তবে ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মা অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসাশিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন মর্মে একটি লিখিত বক্তব্য দেওয়ায় প্রশাসন এ ঘটনায় দোষী শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।
জানা গেছে, হাটহাজারীর পৌর এলাকার মারকাজুল কোরান ইসলামি একাডেমি মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী শিশু ইয়াসিন। সোমবার (৮ মার্চ) বিকেলে মা পারভিন আক্তার ও বাবা মোহাম্মদ জয়নাল মাদরাসায় তাদের সন্তানকে দেখতে যান। কিন্তু ফেরার সময় ছোট্ট শিশুটি মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার বায়না ধরে। এক পর্যায়ে সে মা-বাবার পিছু পিছু মাদরাসার মূল ফটকের বাইরে চলে আসে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মাদরাসার হুজুর ইয়াহিয়া। মা-বাবার সঙ্গে মূল ফটকের বাইরে কেন গিয়েছে শুধু এই কারণেই শিশুটিকে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটান ইয়াহিয়া। শিক্ষার্থীদের কেউ একজন ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করলে, এই নির্মম নির্যাতনে প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেন নেটিজেনরা।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করার পরেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটিকে নির্মমভাবে প্রহার করা হচ্ছে। এ সময় আর্তনাদ করছে শিশুটি।
বিষয়টি অবহিত হয়ে ওই মাদ্রাসায় রাত ১টার দিকে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে অভিযান চালায় হাটহাজারী উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) রুহুল আমীন। এ সময় মাদ্রাসা থেকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে ইউএনও রুহুল আমীন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষার্থী ইয়াসিন ফরহাদকে উদ্ধার করি এবং অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে পুলিশি হেফাজতে নিই। এ সময় ইয়াসিন ফরহাদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার ব্যাপারে পুরোপুরি অবগত হই।
তবে ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব; ঠিক এ সময় শিক্ষার্থীর বাবা-মা এসে কান্নাকাটি শুরু করেন। তারা শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানান ইউএনও।
তিনি আরো জানান, তাদের অনেক বোঝানো সত্ত্বেও তারা লিখিতভাবে আমাদের অনুরোধ করেন আইনিব্যবস্থা না নিতে। রাত ২টা পর্যন্ত অভিভাবকরা আমার কার্যালয়ে অবস্থান করেন যেন আমি আইনিব্যবস্থা না নিই।
নির্বাহী সম্পাদক