বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে সিলেটে প্রায়ই নিজেদের ‘শক্তি’ জানান দেয়ার চেষ্টা করে স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধরে দায়ে অভিযুক্ত দল জামায়াতে ইসলামী’র ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। সদ্য বিদায়ী ২০২০ সালের শেষদিকে সিলেট নগরীসহ বিভিন্ন স্থানে শিবির ক্যাডারদের প্রকাশ্যে অবস্থান করে নানা কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে। শনিবারও (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নগরীতে প্রকাশ্যে দীর্ঘসময় ধরে র্যালি-সমাবেশ করেছে সমালোচিত এ সংগঠন।
তবে শিবির প্রশাসনের কাছ থেকে র্যালি-সমাবেশের কোনো অনুমতি নেয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এমনকি, শিবিরের র্যালি-সমাবেশ সম্পর্কে জানেই না পুলিশ।
এদিকে, সিলেটে শিবিরের এমন সরব হওয়াকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গণ আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সিলেটের সচেতন মহল।
গত বছরের অক্টোবরে সিলেট এমসি কলেজে ছাত্রলীগ নেতাদের দ্বারা ধর্ষণের বিষয়কে ইস্যু করে সিলেটে সক্রিয় হবার চেষ্টা করে ইসলামী ছাত্রশিবির। সিলেটে দীর্ঘদিন থেকে কোণঠাসা হয়ে থাকা ছাত্রশিবির এই ইস্যুতে হঠাৎ করেই রাস্তায় নেমে মিছিল করতে দেখা যায়। ফলে রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা উঠে- সিলেটে ছাত্রশিবির কি আবারও শক্তি সঞ্চয় ও সক্রিয় হতে চেষ্টা করছে?
শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশাল র্যালি ও র্যালি পরবর্তী সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর শাখা। শনিবার সকালে নগরীর বন্দরবাজার থেকে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে র্যালিটি নয়াসড়ক পয়েন্টে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হতে দেখা যায়। এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং সিলেট মহানগর শিবির সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল-ফারুক। কর্মসূচিতে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা শিবিরের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে, পুলিশি বাঁধাহীন এমন কর্মসূচি ছাত্রশিবির পালন করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিলেটের জনসাধারণসহ ইসলামি মূলধারার সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ। তাদের মন্তব্য- বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের অনেক কর্মসূচিতে পুলিশি বাঁধা আসলেও জাতায়াত-শিবিরের সরব কর্মসূচির ব্যাপারে পুলিশের অবগত না থাকা বা কঠোর ভূমিকা পালন না করা হতাশাজনক।
ইসলামি বিভিন্ন সংগঠনের কয়েকজন নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত ২৫ জানুয়ারি ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট মহানগর শাখা আয়োজিত শান্তিপুর্ণ র্যালিটি সংক্ষিপ্ত করে দিয়েছিলো পুলিশ। ওই দিন বেলা ২টার দিকে নগরীর ধোপাদিঘীর পূর্বপাড়স্থ শিশু পার্কের সামনে থেকে র্যালি শুরু হয়ে নাইওরপুল পয়েন্ট হয়ে শিশু পার্কের সামনে আসামাত্র পুলিশ বাঁধা দেয়। পরে র্যালিটি সেখানেই সংক্ষিপ্ত করে পথসভা অনুুষ্ঠিত হয়। যদিও র্যালিটি নগরীর বন্দরবাজারে শেষ করতে চেয়েছিলেন ছাত্র জমিয়ত নেতৃবৃন্দ, কিন্তু পুলিশ বাঁধায় তা সম্ভব হয়নি। কিন্তু দিন-দুপুরে সমালোচিত সংগঠন শিবির কীভাবে এত বড় শো-ডাউন দিতে পারলো তা সত্যি অবাক করার বিষয়।’
এ বিষয়ে মিডিয়া অফিসার হিসেবে (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্বে থাকা সিলেটের মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কশিনার (ট্রাফিক) জৌতির্ময় সরকার পিপিএম বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।
অনুমতি নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান করোনাকালে এমনিতেই মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ। এখানে তো আর অনুমতির কিছু নাই। তারপরও খোঁজ নিচ্ছি, তারা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেয়ার চেষ্টা করেছে কি-না।
সূত্র: সিলেটভিউ
প্রতিনিধি