অনলাইন সংস্করণ: তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে সঙ্গে নিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। বুয়েটের একাডেমিক কমিটির এক মিটিং শেষে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ ক্ষেত্রে ভর্তির নেতৃত্ব বুয়েটের হাতে রাখার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। যদিও বুয়েটের একক কর্তৃত্ব মেনে নিতে রাজি নয় অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
বর্তমানে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক আলাদা পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ পর্যায়েও ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করে থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের অনেক পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি নানা ভোগান্তি ও হয়রানি পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীদের কষ্ট থেকে রেহাই দিতে কেন্দ্রীয়ভাবে এক বা একাধিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও একাধিকবার এ অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। এজন্য চলতি বছর একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে মিটিং করলেও ফেব্রুয়ারি মাসে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল।
তবে এবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে (রুয়েট) নিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য ইউজিসিকে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বুয়েট। ১১ই নভেম্বর বুয়েটের একাডেমি কমিটির মিটিং শেষে এই প্রস্তাব পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয়টি তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছেন তারা।
গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ইউজিসিকে আমরা প্রস্তাব দিয়েছি যে ভর্তি পরীক্ষার যে কমিটি হবে তাতে সভাপতি সবসময় বুয়েটের থাকবে। অন্যান্য সদস্যরা যারা আছেন তারা অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি থেকে থাকবেন। পরীক্ষার যে প্রক্রিয়া প্রশ্ন করা, খাতা মূল্যায়ন করা সেখানেও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা থাকবেন। এ রকম একটা সিদ্ধান্ত গত ১১ই নভেম্বর আমাদের একাডেমিক কমিটিতে হয়েছে সেটা আমরা ইউজিসির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।
পরীক্ষা পদ্ধতি কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চারটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিট ক্যাপাসিটি হচ্ছে চার হাজার। তাহলে আমরা যদি দশ-বারো হাজার শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেই তাহলে দেখা যায় এদের মধ্য থেকেই সবাই চারটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তাই একটা পরীক্ষা থেকেই আমরা যে কমবাইন মেরিট পজিশন করব সেখানে শিক্ষার্থীদের চয়েস অনুযায়ী কে কোথায় ভর্তি হতে চায় সেখানে ভর্তি হতে পারবে। তবে মূল ভর্তি পরীক্ষা বুয়েটেই হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, আমরা কয়েকবছর ধরেই বুয়েটের সঙ্গে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করে আসছি। আর এটা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়েই ছিল কিন্তু তখন আমারা যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম তাতে পর্যাক্রমে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়েরই নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তারা বলছেন, যে এর নেতৃত্ব শুধু তারাই দেবেন, মূল পরীক্ষা তাদের ক্যাম্পাসেই হবে। এখন আমরা বুয়েটের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেব কি-না সেটা একাডেমিক কাউন্সিলই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমার মনে হচ্ছে অধিকাংশ শিক্ষকই বুয়েটের একক কর্তৃত্ব মেনে নেবেন না। সূত্র: যুগান্তর
প্রতিনিধি