Home » সিলেট বিশ্বনাথে ডোবা থেকে নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার

সিলেট বিশ্বনাথে ডোবা থেকে নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার

সিলেটের বিশ্বনাথে মঙ্গলবার সকালে উপজেলার রামপাশা-বৈরাগীবাজার সড়কের বাল্লার ব্রিজের পাশে একটি ডোবা থেকে নিখোঁজের একদিন পর রবিউল ইসলাম (১১) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রহমান নগর গ্রামের আকবর আলীর পুত্র ও স্থানীয় গোয়াহরি লতিফিয়া-ইর্শ্বাদীয়া মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কেউ বা কাহারতাকে হত্যা করে লাশ ডোবায় ফেলেছে।

এঘটনায় নিহতের পিতা আকবর আলী বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ৩/৪ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে মঙ্গলবার বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা ৯ (তাং ১৩.১০.২০ইং)। ওই দিন বিকেলেই মামলা এক অভিযুক্ত উপজেলার করপাড়া গ্রামের আবদুল কাদিরের স্ত্রী মাজেদা বেগম (৪০)’কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।

মামলা এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত রবিউল ইসলামের পিতা (মামলার বাদী) আকবর আলী পেশায় একজন দিনমজুর। স্থানীয় গাংগের পাড় এলাকায় করপাড়া গ্রামের আবদুল রজাক মাস্টার ও আবদুল খালিক গংদের জমি বর্গা চাষ করে আসছেন আকবর আলী। সেকারণে তার পুত্র রবিউল পড়ালেখার পাশাপাশি পিতার সাথে কৃষি কাজে সহযোগীতা করে আসছিলো। প্রায় দেড় বছর পূর্বে একদিন গাংগের পাড় এলাকায় নিজেদের বর্গা চাষকৃত জমি দেখতে যায় রবিউল। ওই সময় গোয়াহরি গ্রামের কামরান মিয়ার গরু জমির ধান খেয়ে ফেললে করপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জাহিদের পুত্র সাদিকুর রহমান ওই গুরুটির পায়ে দা দিয়ে ছেদ মারেন। ওই বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত শালিস বৈঠকে প্রত্যেক্ষদর্শী হিসেবে স্বাক্ষী দেয় রবিউল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রবিউলকে পরবর্তীতে দেখে নেয়ার হুমকি দেন সাদিকুর রহমান। গত ৬ অক্টোবর দুপুরে রবিউল করপাড়া গ্রামের আবদুল কাদিরের বাড়ির পার্শ্ববর্তী গাংগের পাড় এলাকায় গেলে তাকে একা পেয়ে মারধর করেন সাদিকুর। তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও নিরব ভূমিকা পালন করেন আব্দুল কাদির। এরপর বিষয়টি শালিসের মাধ্যমে নিস্পত্তি হলেও রবিউলের উপর ক্ষোভ থেকে যায় সাদিকুর রহমানের।

গত সোমবার সকাল ১১টার দিকে গাংগের পাড় এলাকায় যাবার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করেও তাকে না পাওয়ায় এলাকায় মাইকিং করা হয় এবং সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় রবিউলের মামা শওকত আলী বিশ্বনাথ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন (ডায়েরী নং-৫৪৩)। নিখোঁজের পরদিন মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় রামপাশা-বৈরাগীবাজার সড়কের বাল্লার ব্রিজের পাশে একটি ডোবায় রবিউল ইসলামের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন একজন কৃষক। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।

নিহতের পিতা আকবর আলীর অভিযোগ, পূর্ব বিরোধের জের ধরেই রবিউলকে হত্যা করে তার লাশ ডোবায় ফেলে দেয়া হয়েছে।

মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি একটি হত্যাকান্ড। মামলার অভিযুক্ত মাজেদা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *