Home » জনগণের অর্থের এক পয়সা অযথা ব্যয় করবেন না: প্রধানমন্ত্রী

জনগণের অর্থের এক পয়সা অযথা ব্যয় করবেন না: প্রধানমন্ত্রী

আসন্ন শীতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে করোনা মহামারি আবার দেখা দিলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরকারি অর্থ খরচ করার বিষয়ে সর্বোচ্চ মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ রোববার সকালে সেনাবাহিনীর ১০টি ইউনিট ও সংস্থাকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাভার সেনানিবাসের অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপের অনেক দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসছে। এটা থেকে আমাদের নিরাপদে থাকতে হবে।’ করোনাভাইরাসের কারণে অনেক দেশ খাদ্যসংকটে ভুগছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ফলে আমরা সেই সংকটের মুখে পড়ছি না।’

নুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ৯ পদাতিক ডিভিশনের ৮ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন ও অ্যাডহক ১১ বীর মেকানাইজড ব্যাটালিয়ন, ১০ পদাতিক ডিভিশনের ৬ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন ও ১৩ বীর, ১১ পদাতিক ডিভিশনের ৫৯ ইস্ট বেঙ্গল সাপোর্ট ব্যাটালিয়ন, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন ও ১২ বীর, ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের ১৫ বীর সাপোর্ট ব্যাটালিয়ন, ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ৩ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন এবং স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস (এসআইএন্ডটি) সংশ্লিষ্ট কমান্ডারদের কাছে জাতীয় পতাকা হস্তান্তর করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যেকোনো ইউনিটের জন্য সম্মান ও গৌরবের বিষয়। আজকে আপনারা সেই স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় প্রতাকা অর্জন করেছেন। আমার পক্ষ থেকে এই পতাকা সেনাবাহিনীর প্রধান আপনাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। আমি পারলাম না, এটা আমার দুর্ভাগ্য। তবে এই করোনাভাইরাসের মধ্যে যেখানে যাতায়াত সীমিত হয়ে গেছে, সেখানেও আমি চেয়েছি আপনারা সময়মতো যেন এই পতাকা প্রাপ্তির সম্মানটা অর্জন করতে পারেন। তাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি।’

জাতীয় পতাকা পাওয়া সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা এই গৌরব অর্জন করেছেন এবং আমি আশা করি জাতির আস্থা ও বিশ্বাস অটুট থাকবে। দেশসেবায় আপনারা আত্মনিয়োগ করবেন।’

করোনা মহামারি আবার দেখা দিলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরকারি অর্থ খরচ করার বিষয়ে সর্বোচ্চ মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। ঠিক যেটুকু আমাদের নেহাত প্রয়োজন, তার বেশি এখন কোনো পয়সা খরচ করা চলবে না।’

বাজেটের অর্থ খরচে সংশ্লিষ্টদের মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোভিড-১৯–এর এই সংকটময় সময়েও মানুষের কল্যাণে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এবার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি। যেটা দেওয়া খুব কঠিন ছিল। তবু আমরা দিয়েছি, তারপরও বলেছি যে অর্থ খরচের ব্যাপারে সবাইকে একটু সচেতন থাকতে হবে।’

তাঁর সরকার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ২ হাজার ডাক্তার ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ও এর সব সহযোগী সংগঠন থেকেও অসহায় মানুষকে এই কোভিড-১৯ মহামারিতে সাহায্য প্রদান করে যাচ্ছে। করোনা মোকাবিলায় আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা। গৃহহীনদের মুজিব বর্ষে জন্য সরকারের কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছি। এ দেশে কেউ গরিব-গৃহহীন থাকবে না। সবার উন্নত জীবন নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ শেষে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। সূত্র: প্রথম আলো

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *