নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে একসঙ্গে ছয়টি এসির বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। তারা সবাই রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এর আগে মসজিদের ইমাম আব্দুল মালেক (৬০) ও মুয়াজ্জিনসহ ২১ জন মারা যান। নতুন মারা যাওয়া দুজন হলেন- শামীম হাসান ও জুলহাস। শামীম গতকাল শনিবার রাত আড়াইটার দিকে মারা যান। অন্যদিকে, জুলহাস আজ রোববার সকালে মারা যান।
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, বার্ন ইনস্টিটিউটে বাকি ১৪ জন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, তাদের সবার অবস্থা সংকটাপন্ন। প্রত্যেকেরই শ্বাসনালি, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গেছে।
শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় তারা কেউ আশঙ্কামুক্ত নন। এদের মধ্যে চারজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলেও জানান ডা. সামন্ত লাল সেন। নিহত ২১ জনের লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন। নিহতদের মধ্যে ১৬ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
নিহত যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন- মোস্তফা কামাল (৩৪), নারায়ণগঞ্জ কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রিফাত (১৮), গার্মেন্টকর্মী মো. রাসেদ (৩০), হুমায়ুন কবির (৭০), গার্মেন্টকর্মী ইব্রাহীম বিশ্বাস (৪৩), জুয়েল, সাব্বির (২১), মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. দেলোয়ার হোসেন (৪৫) ও তার সন্তান জুনায়েদ (১৬), চাকরিজীবী মো. জামাল আবেদিন (৪০), কুদ্দুস ব্যাপারী (৭২), পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন (১২), জয়নাল (৫০), কাঞ্চন হাওলাদার, গার্মেন্টকর্মী নয়ন, ৭ বছরের শিশু জুবায়ের, ওয়ার্কশপ শ্রমিক রাসেল (৩৪) ও মো. বাহাউদ্দিন (৫৫), মো. মিজান (৪০), মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক নেসারি (৫৫), শামীম হাসান ও ফটো সাংবাদিক নাদিম হোসেন (৪৫)।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে এশার নামাজের সময় এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অর্ধ-শতাধিক মুসল্লি আহত হন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল জিল্লুর রহমানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খাদিজা তাহেরী ববিকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আগামী ৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ঢাকা অফিসের মহাব্যবস্থাপক (জিএম-পরিকল্পনা) আবদুল ওহাব তালুকদারকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সূত্র: আমাদেরসময়
প্রতিনিধি