নিজস্ব প্রতিবেদন: গত ২৭ রমজান বাবনা পয়েন্টস্থ রেলওয়ের সাধুরবাজার সংলগ্ন যমুনা ওয়েল ডিপোর পাশে রয়েছে ট্যাংকলরির সদস্য মোঃ ইউনুস মিয়া তেল বিক্রির একটি দোকান। তেলের লরি থেকে দ্বিতীয় দফা তেল বিক্রিকালে বরইকান্দি এলাকার এজাজুল, রিমু, মুন্নার নেতেৃত্বে ৭/৮জন সন্ত্রাসী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে প্রথমে টাকা দাবী করে। টাকা না দেওয়ায় তারা ইউনুস মিয়া ও তার শ্রমিকদের উপর শুরু করে হামলা। এক পর্যায়ে দোকানের ক্যাশে থাকা তেল বিক্রির প্রায় ৩লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মোঃ ইউনুস মিয়া বাদি হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত ঘটনায় বিভাগীয় ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল আহমদ রিপন জুড়ালো প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ প্রশাসনকে বার বার অনুরোধ করলেও তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি। এনিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে আন্দোলনের ঈদ ও করোনার জন্য কোন কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করেন, আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশকে অবগত করার পরও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। অপর দিকে গত ১লা জুলাই রেলওয়ে প্রকৌশলী আলী আকবরের নেতৃত্বে ট্যাংক লরি রাখা নিয়ে যমুনা ডিপোর সামনে শ্রমিকদের উপর হামলা করা হয়। এতে শ্রমিকরা আহত হন।
বিভাগীয় ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মনির হোসেন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমির আলী’সহ শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, উক্ত ঘটনার জের ধরে সন্ত্রাসী এজাজুল, রিমু, মুন্নার নেতেৃত্বে ১০/১২জন সন্ত্রাসী রিপনের উপর হামলা করে। রাত প্রায় ১০টার দিকে সাধারণ সম্পাদক রিপন যমুনা ওয়েল ডিপো সংলগ্ন তার দোকান বন্ধ করে সাথে থাকা তার এক সহযোগী বাবলা মিয়াকে নিয়ে পিরোজপুর রোডস্থ পূর্ব খোজারখলাস্থ বাসায় ফিরছিলেন, তখন বাবনা পয়েন্টস্থ আসা মাত্র সন্ত্রাসীরা তাদের উপর হামলা করে।
এতে চাকুর আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে রিপন মাঠিতে লুটে পড়েন। সাথে থাকা বাবলা এগিয়ে এলে তিনিও গুরুতর আহত হন। আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে তাৎক্ষনিক ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে যাওয়া মাত্র কর্তব্যরত ডাক্তার রিপনকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রমিক নেতা রিপন নিহত হওয়ার সংবাদ শুনে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে প্রথমে বাবনা পয়েন্টে সড়ক অবরোধ করেন। পরে রাত প্রায় ১১টার দিকে চন্ডিপুল পয়েন্টে গিয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
বিভাগীয় ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মনির হোসেন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমির আলী’সহ শ্রমিক নেতারা অভিযোগ করে আরো বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনার পর যদি সন্ত্রাসীদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করতো তাইলে আজ এই খুনের ঘটনা হতো না। দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ খাইরুল ফজল, সেকেন্ড অফিসার রিপন দাস ও কদমতলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই ফয়েজ বার বার বলার পরও তাদেরকে গ্রেফতার করেনি। পুলিশের সহযোগীতায় সেই ছিনতাইকারীরা নানা অপকর্ম করছে প্রতিদিন।
আন্দোলনকারী শ্রমিকরা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, ইন্ধনদাতা রেলওয়ের প্রকেীশলী আলী আকবরকে গ্রেফতার ও তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবী জানান। তারা বলেন, রেলওয়ের প্রকেীশলী আলী আকবরের ইন্ধন রয়েছে। তাই আলী আকবরকে গ্রেফতারের জোর দাবী জানান শ্রমিক নেতারা। রিপন হত্যার পিছনে এ রিপোর্ট লেখার মধ্যরাত পর্যন্ত দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুলে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ চলছিলো।
নিহত ইকবাল আহমদ রিপন স্থানীয় খোজারখলা পশ্চিম মহল্লা গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র। তার এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।
বার্তা বিভাগ প্রধান