যুগ যেমন পাল্টেছে প্রতারকদের প্রতারণার ধরনও পাল্টেছে। একসময় গ্রামে সিঁদেল চোর ছিলো। গৃহস্থের কাঁচা বেড়ার নিচ দিয়ে গর্ত করে চোরেরা ঘরে প্রবেশ করে টাকা পয়সা ও মূল্যবান জিনিস চুরি করতো। গৃহস্থের ঘরে এখন দালান উঠেছে তাই সিঁদেল চোরেরা আর আগের পেশায় নাই। বৃটিশ আমলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে দুর্ধর্ষ ঠগিদের গল্প আমরা সবাই জানি। কিংবা ধরেন এ জমানার ছিনতাইকারী বা পকেটমার। কিন্তু ডিজিটাল যুগে যখন চুরি ছিনতাই পকেটমারা কঠিন হয়ে গেলো তখন আবির্ভাব হলো প্রতারণার মাধ্যমে ডিজিটাল পন্থায় মানুষের টাকা চুরির পদ্ধতি।
বিকাশ একাউন্ট আছে কিন্তু প্রতারকদের কাছ থেকে ফোন কল পান নাই এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। আবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যাও অনেক। আর এই প্রতারকদের প্রতারণা থেকে বাঁচতে বিকাশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে বিজ্ঞাপন তৈরি করতে। তবু মানুষ বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক শিক্ষার্থী প্রতারণার শিকার হওয়াদের একজন। গত ২৮/০৬/২০২০ খ্রিঃ তারিখ তাকে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে প্রতারনার মাধ্যমে তার বিকাশ একাউন্ট হতে মোট ৭২,৯০০/- টাকা নিয়ে যায় প্রতারক চক্র। চার পাশে যখন অন্ধকার ঘিরে ধরেছে তখন তিনি যোগাযোগ করেন শাবিপ্রবির সাবেক ছাত্র সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ এর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক, অতিরিক্ত দায়িত্বে এডিসি মিডিয়া) জনাব জ্যোতির্ময় সরকারের সাথে, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে তপু নামে পরিচিত। জনাব জ্যোতির্ময় সরকারের পরামর্শে তিনি কোতোয়ালি থানায় ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন। জনাব জ্যোতির্ময় সরকার কোতোয়ালি থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার নির্মলেন্দু চক্রবর্তীকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেন। পরবর্তীতে উক্ত জিডির তদন্তকারী অফিসার বিষয়টি কোতোয়ালি থানার সহকারি পুলিশ কমিশনার(এসি) নির্মলেন্দু চক্রবর্ত্তীকে অবহিত করেন। এসি কোতোয়ালি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহন করে বিকাশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। বিকাশ কর্মকর্তা আর পুলিশের তৎপরতায় প্রতারণার শিকার শিক্ষার্থী ফিরে পান ৪৫,৫০০ টাকা। এসি কোতোয়ালি জানান বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। ঘটনার সাথে জড়িত চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য কার্যক্রম চলমান আছে।
টাকা ফিরে পাওয়ার পর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী তার নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। তিনি তার পোস্টে বাংলাদেশ পুলিশের আন্তরিকতায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন।
এই বিষয়ে এডিসি মিডিয়া জ্যোতির্ময় সরকার জানান, প্রতারক চক্র প্রতিনিয়ত মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিকাশ একাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রায়শই এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করছে। প্রতারক চক্র সাধারণত কল দিয়ে বলে, ভুলে টাকা চলে গেছে, লটারি পেয়েছেন ,হেড অফিস থেকে কল দেওয়ার নাম করে পিন নাম্বার জানতে চায়। তিনি বিকাশ গ্রাহকদের এই ধরনের ফোন কলের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করেন।

প্রতিনিধি