Home » ছড়ারপারে বাসা দখল নয়, আসামী ধরতে অভিযান

ছড়ারপারে বাসা দখল নয়, আসামী ধরতে অভিযান

ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেট নগরীর ছড়ারপারে বাসা দখলের অভিযোগের ভিন্নচিত্র পাওয়া গেছে। মূলত এটা ছিল পুলিশ-জনতা কর্তৃক মাদকহাট উচ্ছেদ ও পলাতক আসামী গ্রেপ্তার আভিযান। এটাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বাসা দখলের অভিযোগ প্রচার করা হয়েছে। সরে জমিন অনুসন্ধানে এমন চিত্র ফুটে ওঠেছে। জানা গেছে, নগরীর ছড়ারপার মসজিদ সংলগ্ন কথিত বাগিছা কলোনীর মালিক একজন প্রবাসী এবং একই এলাকার ১৩নং বাসার মালিক জনৈক সাবুু মিয়া। ওই প্রবাসীর আত্মীয় হওয়ার সুবাদে সাবু মিয়া ওই কলোনীর পাশে অস্থায়ী একটি দোকান খোলেন। দোকানের উছিলায় সাবু মিয়া ও তার পরিবার ওই কলোনীতে গড়ে তোলে ইয়াবা ও মাদকের রমরমা হাট ও বানিজ্য। বিভিন্ন স্থন থেকে আসা মাদকসেবীরা এ হাটে গিয়ে জমায়েত হয় এবং প্রত্যহ দিনমজুর ও পথচারীদের টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। ফলে এলাকা একটি ক্রাইম জোনে পরিনত হয়ে ওঠে। সম্প্রতি এলাকার শতাধিক মানুষ সাবুর এ মাদকহাট উচ্ছেদ ও অপরাধীদের দমনে এসএমপি কমিশনার বরাবের স্মারকলিপিও প্রদান করেন।

এরই মধ্যে গত ১৩ মে সাবু মিয়া ও তার স্বজনদের হামলায় প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলাম শামীমের কলোনীর ভাড়াটিয়া ফাইজুল মিয়া ও তার পরিবারের নারী শিশুসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় ফাইজুল মিয়ার স্ত্রী ছলিমা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় ১৭(৫) ২০২০ নং একটি মামলা করেন। মামলায় সাবু মিয়া তাপর পুত্র রুহেল ও রুমেল-সহ ৬ জনকে এজাহারভুক্ত করে অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনকে আসামী করা হয়। মামলায় পুুলিশ সাবু মিয়ার পুত্র সন্ত্রাসী রুমেল আহমেদকে গ্রেফতার করলে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে সে জামিনে বেরিয়ে আসে। তবে ইয়াবা ব্যবসায়ী সাবু মিয়া সহ অপর ৫ আসামী এখনো পলাতক রয়েছে। মামলার পলাতক আসামীদের ধরতে শুক্রবার (৫মে) বিকেলে পুলিশ ওই কলোনীতে অভিযান চালায়। এ সময় স্থানীয় প্রতিবাদী জনতাও পুলিশকে সহযেগিতা করেন। পুলিশ মামলার প্রধান আসামী রুহেল ও সাবু মিয়াদের না পেয়ে তাদের মাদক আস্তানা উচ্চেদ করে দেয়। তবে কলোনীর অন্য আরো ১২ টি পরিবার ও দোকান নিজ নিজ অবস্থানে রয়েছেন। এদের কাউকে বের করে দেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে আরো দেখা যায়, কথিত ওই বাগিছা কলোনীর পাশেই রয়েছে ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম শামীমের মালিকানা আরেকটি কলোনী। পতি বেগম নামের এক মহিলা ওই কলোনী তত্বাবধান করেন এবং খোকন আহমদ নামের এক কর্মচারী তার কলোনীর ভাড়া আদায় করে থাকেন। সিরাজুল ইসলাম শামীমের কলোনীতে থাকা তার নামের সাইনবোর্ডকে বাগিছা কলোনীর নতুন সাইনবোর্ড বানিয়ে বাসা দখলের মিথ্যা অভিযোগ প্রচার করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

ঘটনার বিষয়ে উল্লেখিত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই বিমল চন্দ্র দে সাংবাদিকদের জানান, ছড়ারপারের এই স্থানে মাদকের হাট বসে এবং এখানে আমার তদন্তাধীন মামলার পলাতক ৫ আসামীও রয়েছে। এ নিয়ে এলাকার জনমনে চরম ক্ষোভও বিরাজ করছে। তাই শুক্রবার উত্তেজনা প্রসমন ও মামলার আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চালায় পুলিশ। এখানে দখলবাজির কোন ঘঠনা ঘটেনি বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, সাবু মিয়ার পুত্র রুমেলের ইয়াবা ও ছিনতাই বিভিন্ন অপরাধের ১২ টি মামলা তদন্তাধীন ও বিচারাধীন রয়েছে।

সিলেট সিটির ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম সাংবাদিকদের জানান, সাবু মিয়া ওই কলোনীতে দোকানের নামে মাদকের হাট ও অপরাধীদের আস্তানা বসিয়েছেন। ফলে এলাকার লোকজন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন। শুক্রবার পুলিশ মামলার পলাতক আসামী সাবু মিয়া ও তার ছেলে রুহেলদের গ্রেফতারে অভিযান চালায়। সাথে এলাকার জনতা সহযোগিতা করে। এখানে জমি দখলের কোন প্রশ্নই ওঠে না। একটি অনলাইন প্রচার মাধ্যমে সিরাজুল ইসলাম শামীমের পৃথক কলোনীন সাইনবোর্ডকে ওই কলোনীর সাইনবোড বলে প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, উক্ত সিরাজুল ইসলাম শামীমের অত্র এলাকায় একাধিক কলোনী রয়েছে। যা সরেজমিনে দেখা যায়।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *