Home » নীলাচল – লাবণ্য কান্তা

নীলাচল – লাবণ্য কান্তা

ফাল্গুনি পূর্ণিমাতে গিয়েছিলাম আবীর খেলতে,
ফিরতি পথে কী বিপুল বিস্ময়ে
তাকিয়ে দেখেছি _
নাগরিক সবুজে অশোক গাছে থোকায় থোকায়
আধফোটা অশোককলি।
একবার রাজু ভাস্কর্যের পাশে দাঁড়িয়ে
পুনরায় বিস্মিত চোখে তাকালাম
নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের পিলারগুলোর দিকে।

তারপর একদিন দুদিন তিনদিন চারদিন,
অবশেষে আজ চৌত্রিশটা দিন _
হতাশার কফিনে
বিষাদের ঘ্রাণ মেখে তাকিয়ে থাকি
মৃত্যুমিছিল নীরব হুইসেলের দিকে।
ভুলে গেছি অশোকের কথা,
ফুটেছে নিশ্চয় কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু,
ভুলে গেছি অনায়াসে সব।
চারদিক যে বিনাশিনী নৃত্যে উল্লসিত,
তার মাঝে শুধু বেঁচে রয়েছে মুমূর্ষু মানুষ।

তাদের প্রেম গেছে হারিয়ে বেঁচে আছে আশা।
কোথায় যে কবি বলেছেন, _
”আনন্দকে ভাগ করলে পাওয়া যায় প্রেম আর জ্ঞান।”
এই দুটোর ভাগাভাগিতে যাচ্ছিনে,
পুরো আনন্দটাকে দুহাতে ছুঁয়ে
এই মুমূর্ষু তমিস্রা পার হয়ে _
কোনো হিমাচল, নীলাচল কিংবা অস্তাচলে
বিপুল বিস্ময়ে পুনরায় তাকাতে চাই।
পূর্ণপ্রাণে দেখতে চাই পুনরায় তোমাকে,
প্রশান্তির পরশের মত, কমলা বিকেলের মত।

একবার আবার পৃথিবী জেগে উঠুক নরম ঘাসে,
মখমলি রুমালে মুছে ফেলুক তার অশ্রু।
পুনরায় সবাই জেগে উঠুক নতুন প্রাণে
পুনরায় সকলেই মিলিত হোক সবার প্রাণে।
ততোদিনে অশোক- জারুল- কৃষ্ণচূড়া ঝরে যাবে,
রয়ে যাবে ড্রয়ারে রাখা শুকনো গোলাপ।
আমরা ততোদিন শুকনো গোলাপের সুরভি মেখে
অধীর আগ্রহে বিপুল বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি।

লেখকের ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *