বুয়েনস আয়ারস: আর্জেন্তিনা জাতীয় দলের হয়ে খেলেননি কখনও। কিন্তু রোজারিও সেন্ট্রালের হয়ে খেলা প্রাক্তন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার থমাস কার্লোভিচের ফুটবল স্কিল পেকারম্যানকে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে পেকারম্যান একবার কার্লোভিচ সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমার চোখে দেখা সবচেয়ে অবিশ্বাস্য ফুটবলার।’ আর মারাদোনা তো কার্লোভিচে এতটাই মুগ্ধ ছিলেন যে ফুটবলের রাজপুত্র কার্লোভিচের কাছে গিয়ে একবার স্বীকার করেন, ‘ত্রিঞ্চে তুমি আমার চেয়ে অনেক ভালো ফুটবলার।’
সেই থমাস কার্লোভিচ, ফুটবল মাঠে যাঁর পোশাকি নাম ‘এল ত্রিঞ্চে’ প্রয়াত হলেন ৭৪ বছর বয়সে। যদিও মৃত্যুটা সুখের হল না আর্জেন্তিনা কিংবদন্তির। দুষ্কৃতি হামলায় আহত হয়ে দিনদু’য়েক লড়াইয়ের পর নিউ মেক্সিকোর একটি শহরে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই কার্লোভিচের মৃত্যুতে আবেগঘন মারাদোনা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে সম্প্রতি কার্লোভিচের সঙ্গে সাক্ষাতের বেশ কিছু মুহূর্ত পোস্ট করে শোকপ্রকাশ করেছেন মারাদোনা। ক্যাপশন হিসেবে মারাদোনা লেখেন, ‘আমি ভাবতে পারছি না। দিনকয়েক আগেও তোমার সঙ্গে দেখা হল। আর আজ তুমি নেই। তোমার পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। আশা রাখি ন্যায়বিচার পাবেই তুমি। শান্তিতে ঘুমোও প্রভু।’
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলের রাজপুত্র মারাদোনার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে কার্লোভিচ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘ও আমার কানের কাছে এসে প্রচুর কথা বলে যাচ্ছিল। থামতেই চাইছিল না। আমার নাম লেখা একটি জার্সিতে স্বাক্ষর করে লিখে দিয়েছে, ত্রিঞ্চে তুমি আমার চেয়ে অনেক ভালো ছিলে।’ কার্লোভিচ জানিয়েছিলেন ওই একটিমাত্র কথারই উত্তর দিয়ে মারাদোনাকে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘দিয়েগো এবার আমি শান্তিতে মরতে পারি। তবে আমার জীবদ্দশায় দেখা সেরা ফুটবলার তুমিই।’
কার্লোভিচ কেরিয়ারে একটিমাত্র প্রিমিয়র ডিভিশন ম্যাচ খেলেছিলেন। এছাড়া বাকিটা সময় দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাবের হয়ে খেলেই সমীহ আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি। আর্জেন্তাইন প্রাক্তন ম্যানেজার সিজার লুইস মেনোত্তি জানিয়েছেন, ‘একবার কার্লোভিচকে জাতীয় দলে সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু ম্যাচের দিন ও মাছ ধরতে কিংবা কোনও আইল্যান্ডে চলে গিয়েছিল।’ ১৯৮৬ আর্জেন্তিনা বিশ্বজয়ী দলের সদস্য জর্জ ভালদানো একবার বলেছিলেন, ‘কার্লোভিচ হলেন রোমান্টিক ফুটবলের প্রতীক যার আর অস্তিত্ব নেই।’
নির্বাহী সম্পাদক