দিন দিন সিলেটে বাড়ছে করোনা রোগী। ইতোমধ্যে বিভাগের প্রায় সবকটি উপজেলায় হানা দিয়েছে করোনা। গত ৫ এপ্রিল সিলেটে মাত্র একজন করোনা রোগী ছিলেন। আজ ৬ মে, এক মাসের ব্যবধানে সিলেটে আক্রান্ত হয়েছেন ২৬৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। তাদের মধ্যে ৪০ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। যার মধ্যে ১৫ জন চিকিৎসক, সেবিকা (নার্স) ৮ জন ও হাসপাতালের স্টাফ রয়েছেন ২২ জন। সিলেটে ক্রমাগত হারে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। ইতোমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এই মুহুর্তে করোনার ভয়াল থাবা থেকে বাঁচতে হলে লকডাউন মানার কোন বিকল্প নেই। প্রয়োজনে গৃহবন্ধি থাকতে হবে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও বলছেন- ভীড় এড়িয়ে চলা, মুখে মাস্ক, হাতে গ্ল্যাভস ব্যবহার করা, প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে। ঠিক ওই মুহুর্তে শপিংমল, দোকানপাট ও মার্কেটগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষনা করেছে সরকার। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আগামী ১১ মে রোববার থেকে দোকানপাট, শপিংমল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু সিলেটের ব্যবসায়ীরা করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমে না যাওয়ার আগ পর্যন্ত দোকান খুলতে রাজি নয়। করোনা সংক্রমন ঝুঁকি নিতে চান না সিলেটের ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়- সিলেটে কাপড়ের দোকানের প্রায় সকল কাপড়ই আসে নারায়নগঞ্জ, ঢাকা ও নরসিংদী থেকে। ঈদ উপলক্ষে দোকান পাট খুলে দেওয়া হলে করোনার ডেঞ্জারজোন খ্যাত ওইসব এলাকা থেকে কাপড় চোপড় আসবে। এ কারনে সিলেটেও করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন- কাপড়ে করোনা ভাইরাস ৭ দিনের চেয়ে বেশী দিন বাঁচে। ফলে করোনা ঝুঁকিতে পড়বে সিলেট। তবে- নগরীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, নগরীর প্রায় ৭০% ক্রেতা বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসেন। ঈদ উপলক্ষে তারা শপিং করতে নগরীতে প্রবেশ করেন। কিন্তু যানবাহন না চললে ক্রেতারা আসবেন কি করে। তাছাড়া বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো কষ্টসাধ্য হওয়ায় প্রবাসী নির্ভর ক্রেতারা তেমন একটা শপিং করতে আসবেন না। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই এবার ঈদে ক্রেতা কমে যাবে। এর চেয়ে ভাল হবে- করোনা সংক্রমন রোধে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, শপিংমল না খুলে অন্তত ৩১ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করা।
একটাই কথা- আগে দেশকে, দেশের মানুষকে করোনা থেকে বাঁচতে হবে। আগে জীবন, পরে জীবিকা। জীবন না থাকলে জীবিকা দিয়ে কি হবে? তাই ব্যবসায়ীরা ৩১ মে পর্যন্ত দোকান পাট বন্ধ রাখার জন্য ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান