অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা আজ বৃহস্পতিবারই মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে। গত মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক।
এদিকে অ্যান্টিবায়োটিক এজিথ্রোমাইসিন এবং ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইন সেবনের মাধ্যমে করোনা রোগীকে সারিয়ে তোলার আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা শুরু করেছে কানাডা। কানাডার স্বাস্থ্য বিভাগ মঙ্গলবার এ ক্লিনিক্যাল টেস্টের অনুমোদন দেওয়ার পর থেকে হ্যামিল্টনে এর পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনোলজির অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট বলেন, তার টিম এখন যে টিকা তৈরি করছে, সেটি সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেই ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন। মে মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত প্রথম ধাপে টিকা পরীক্ষার আওতায় আনা হবে ৫শ জনের মতো। পরীক্ষা সফল হলে আরও মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে ট্রায়ালে।
ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী হ্যানকক করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রস্তুতের এ প্রচেষ্টায় নতুন করে তহবিল বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজও টিকা তৈরিতে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
এদিকে কানাডার স্বাস্থ্য বিভাগ অ্যান্টিবায়োটিক এজিথ্রোমাইসিন এবং ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইন সেবনে করোনা মুক্তির সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করেছে। এরই মধ্যে হ্যামিল্টনের বিভিন্ন হাসপাতালে আক্রান্ত ৫শ রোগীকে পরীক্ষার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নিজেদের বাড়িতে রেখে আরও এক হাজার রোগীকে এ পরীক্ষার আওতায় চিকিৎসা দেওয়া হবে। দ্বৈব চয়নের ভিত্তিতে এসব রোগীর মধ্য থেকে কাউকে এ ওষুধের মিশ্রণ এবং কাউকে থেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করা হবে। গবেষকরা দেখবেন কোন প্রক্রিয়াটি কার্যকর এবং নিরাপদ।
গবেষক দলের অন্যতম সোনিয়া আনন্দ গত মঙ্গলবার প্রথম রোগীকে এ ওষুধ সেবন করতে দিয়ে এক টুইট বার্তায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির পপুলেশন হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং হ্যামিল্টন হেলথ সায়েন্স সম্মিলিতভাবে এই ক্লিনিক্যাল টেস্ট শুরু করেছে। বিশ্বের ১০টি দেশের গবেষকরা এই ক্লিনিক্যাল টেস্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) একটি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ১৫ মিনিটে করোনা ভাইরাস শনাক্তের কিট উদ্ভাবন করেছে। টাটার অর্থায়নে ই২৫বায়ো নামে ওই প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তারা এমনটা দাবি করেছেন। তাদের দাবি, তাদের তৈরি অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটটি প্রচলিত অন্য পদ্ধতির চেয়ে দ্রুত করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তে সক্ষম।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা (সিটিও) আইরিন বোস বলেন, তাদের পরীক্ষাটি অনেকটাই প্রেগিনেন্সি টেস্টের মতো। তবে এ ক্ষেত্রে নাসোফেরেঞ্জিয়াল সোয়াব প্রয়োজন হবে। বর্তমানে তাদের গবেষকরা এ সোয়াবের পরিবর্তে অন্য কোনো নমুনা, যেমন লালা ব্যবহার করা যায় কিনা, তা পরীক্ষা করছেন।