বিদায় ১৪২৬। নতুন বছর ১৪২৭ স্বাগত। এ বছর আর নববর্ষে শোভাযাত্রা, মেলা, হালখাতা খোলায় মেতে ওঠা নয়। করোনা সংকটে চারিদিকেই হতাশা আর আশঙ্কার কালো মেঘ। তবুও আমোদপ্রিয় বাঙালি উৎসব পালনে এতটুকুও ফাঁক রাখতে নারাজ। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই এবার হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকেই বাঙালির বর্ষবরণ। নতুন বছর ১৪২৭ হোক করোনা-মুক্ত। পয়লা বৈশাখে ঘরে-ঘরে আজ একটাই প্রার্থনা।
মারণ ভাইরাসের হানায় শিকেয় সব উৎসব পালন। বেজায় মন খারাপ বাঙালির। এবারের পয়লা বৈশাখে ঘরবন্দি আমোদপ্রিয়-ভোজনরসিক বাঙালি। লকডাউন মেনে বাড়িতে থেকেই তাই নববর্ষ পালন। উধাও বাঁধভাঙা সেই উচ্ছ্বাস, তবে রয়ে গিয়েছে চিরাচরিত সেই আবেগ।
চৈত্রের শুরু থেকেই প্রমাদ গোণা শুরু। পয়লা বৈশাখের আগেই হয়তো উধাও হবে করোনার করাল গ্রাস। ভাবনাই হল সার। মারণ করোনা আরও ভয়াবহ রূপ নিল। রিস্ক নেওয়াটাই আজ সবচেয়ে বড় বোকামি। চালাক বাঙালি তাই বাড়িতেই মজে বর্ষবরণের আনন্দে।
এবার বোধ হয় অন্য স্বাদের, ভিন্ন ভাবনার বাংলার নতুন বছর বরণ। প্রাণোচ্ছ্বল হয়ে আনন্দ করার উপায় নেই, নেই সেই ইচ্ছাটাও। গোটা পৃথিবী যে লড়ছে ভয়ঙ্কর এক বিপদের সঙ্গে। লড়ছি আমরাও। ঘরে থেকেই যুদ্ধ জয়ের দারুণ চেষ্টায় একজোট হয়েছি সবাই।
এরই মধ্যে চলে এল পয়লা বৈশাখ। না, এবার আর মিষ্টি আর ক্যালেন্ডারের লোভে দোকানে-দোকানে ভিড় জমাবে না কমবয়সীরা। ব্যবসায়ীরাও নতুন খাতা তৈরি করে পুজো দিতে যাবেন না মন্দিরে। বাড়িতে থেকেই যাবতীয় প্রার্থনা ভগবানের উদ্দেশ্যে। ব্যবসায় মঙ্গলকামনার সঙ্গে গোটা পৃথিবী থেকে মারণ ভাইরাসের কালো চাদরটাও তুলে নেওয়ার প্রার্থনা চলবে ঘরে-ঘরে।
এ এক অন্য পয়লা বৈশাখ। বহু বাড়িতেই আজ ভুরিভোজের ভাবনা নেই। বরং বাংলা বছরের এই প্রথম দিনটিতে করোনা-মুক্ত এক পৃথিবী চাইছে বাঙালি। বিশ্ববাসীর এই মুহূর্তে এই একটাই চাওয়া। সবের হয়েই আজ প্রার্থনায় বাঙালি। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে পয়লা বৈশাখে তাই করোনা-মুক্ত পৃথিবীর সন্ধান।
নববর্ষ উদযাপনে ভাঁটার শুরুটা হয়েছিল চৈত্র শুরু কয়েকদিনের মধ্যেই। বাঙালির সাধের চৈত্র সেলের বাজার এবার শুরুতেই শেষ। সেলের বাজারে গড়িয়াহাটে না যেতে পেরে প্রাণ হাঁফিয়ে উঠেছিল বাঙালির। গত কয়েকদিনে একই দশা চোখে পড়ে রাজ্যের অন্যত্রও। শুনশান ছিল রাস্তাঘাট, উধাও ছিল পরিচিত সেই হুড়োহুড়িও।
লকডাউনের গোটা চৈত্রই ঘরে কেটেছে। তবুও মন-খারাপের পয়লাতেই বৈশাখ-বরণ বাঙালির…
নির্বাহী সম্পাদক