অনলাইন ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির সভাপতির পদে আর ফিরবেন না শাঁওলি মিত্র। রবিবার বিষয়টি স্পষ্ট করে দিলেন প্রখ্যাত এই নাট্যব্যক্তিত্ব।
এই মর্মে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং আকাদেমির দায়িত্বে থাকা এক সরকারি আধিকারিকের কাছে চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শাঁওলি বলেন, ‘‘আচমকা কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। আমি অসম্মানিত বোধ করেছি। কয়েক মাস আগেই সভাপতির পদ থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছিলাম। কিন্তু, তার পরও সরকারের তরফে আমাকে ফিরিয়ে নেওয়ার কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। কোনও সমাধান সূত্র না মেলায় বাধ্য হলাম এই সিদ্ধান্ত নিতে।’’
গত বছর ডিসেম্বরেই সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন শাঁওলি মিত্র। তার পরই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল সরকার পক্ষ এবং শাঁওলি মিত্রের মধ্যে। শাসক দলের তরফে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
বামফ্রন্ট সরকারকে ‘পরিবর্তনে’র লড়াইয়ে বিদ্বজ্জন হিসেবে শরিক হয়েছিলেন শাঁওলি। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১২ সাল থেকে আকাদেমির সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এই কয়েক বছরে বেশ কিছু বই প্রকাশ করে নজিরও গড়েছে আকাদেমি। এখন তা হলে কী কারণে সরে দাঁড়ালেন তিনি?
রাজ্য সরকার তথা শাসক পক্ষের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব যে বাড়ছিল, সে কথা গত ডিসেম্বরে নিজেই বলেছিলেন শম্ভু মিত্রের কন্যা। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘গত এক-দুই বছর ধরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে। সেটা কেন জানি না।’’শাঁওলির সময় কালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বহু রচনা প্রকাশিত হয়েছে। গত বছর বইমেলায় আকাদেমির তরফে ১২টি বই প্রকাশ হয়েছিল। আকাদেমির কাজ যে ভাবে পদে পদে থমকে যাচ্ছে, তা নিয়ে সম্প্রতি শাঁওলিদেবী তাঁর অসন্তোষের কথা ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েওছিলেন।
মহাশ্বেতা দেবী ২০১২ সালে বাংলা আকাদেমির সর্বোচ্চ পদ থেকে সরে যাওয়ার পর দায়িত্বে আসেন শাঁওলি। সাম্মানিক এই পদে অতীতে বসেছেন অন্নদাশঙ্কর রায় (১৯৮৬-২০০২), অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় (২০০২-২০০৩) এবং নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (২০০৩-২০১১)। নীরেন্দ্রনাথের পর মহাশ্বেতা দেবী এলেও, তিনি বছর খানেকের মধ্যেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার পর প্রায় পাঁচ বছর দায়িত্ব সামলেছেন শাঁওলি।
নির্বাহী সম্পাদক