টিভিতে ক্রাইম পেট্রোল দেখে বিশ্বনাথে হাফিজ নুরুল আমিন ওরফে লাইস মিয়াকে (২৫) খুন করে আশফাক আহমদ রাতুল (১৬)। নুরিল আমিন গৃহশিক্ষক হিসেবে রাতুলদের বাড়িতে থাকতেন।
রাতুল সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার পূর্ব সিরাজপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। আর খুন হওয়া হাফিজ নুরুল আমিন ওরফে লাইস মিয়া বিশ্বনাথ দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার আলীম পরীক্ষার্থী। তিনি জগন্নাথপুরের শ্রীরামসী গ্রামের মৃত সাজ্জাদ আলীর ছেলে। বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) ভোররাতে জরুরী কাজের কথা বলে হাফিজ নুরুল আমিনের রুমে গিয়ে ছুরিকাঘাত করে তাকে খুন করে রাতুল।
ঘটনার পরপরই রাতুল ও ও তার বাবাকে আটক করে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। এরপর পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে রাতুল। ওইদিন (বৃহস্পতিবার) রাতে নিহত হাফিজ নুরুল আমিনের ছোটভাই নজরুল ইসলাম ওরফে এলাইছ মিয়া বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দাযের করেন। মামরা নং ৮।
এরপর শুক্রবার (১০ এপ্রিল) ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রাতুলকে আদালতে পাঠানো হলে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মাহবুবুর রহমান ভূইয়ার আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে জানিয়ে বিশ্বনাথ থানার ফেসবুক আইডিতে রাতুলের জবানবন্দি ও হত্যার রহস্য উদঘাটনের বিষয়টি পোস্ট করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মুসা জানান, আটকের পর হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছে আশফাক আহমদ রাতুল। এছাড়া শুক্রবার আদালতেও ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে রাতুল হত্যার দায় স্বীকার করে বলেছে, তাদের ঘরে লজিংয়ে থাকা হাফিজ নুরুল আমিন দীর্ঘদিন ধরে তার ছবি ব্যবহার করে তার নামে একাধিক ভূয়া ফেসবুক আইডি খোলে প্রতারণা করে আসছিলেন। এসব ফেইক আইডি থেকে তাদের (রাতুলের) আত্মীয়-স্বজনদের কাছে অশ্লিল ছবি পাঠাতেন নিহত হাফিজ নুরুল আমিন। টাকা পয়সা দিয়েও যখন এই ব্ল্যাকমেইল থেকে রেহাই পাচ্ছিলো না তখন হাফিজ নুরুল আমিনকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় রাতুল। এজন্য টিভিতে ক্রাইম প্রেট্রল দেখে দেখে শক্তি, সাহস ও পরিকল্পনা করে সে। একপর্যায়ে গত ৮ এপ্রিল বুধবার দিবাগত রাতে জরুরী আলাপ করার কথা বলে হাফিজ নুরুল আমিনের রুমে গিয়ে তাকে খুন করে রাতুল। তারপর সে নিজেই চিৎকার করে বাড়ির লোকজন জড়ো করে বলে কারা হাফিজ নুরুলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে গেছে। এসময় বাড়ির লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় নুরুল আমিনকে হাসপাতালে নিয়ে রওয়ানা হলে পথিমধ্যেই সে মারা যায়। সিলেটটুডে
নির্বাহী সম্পাদক