পৃথিবীর ফুসফুস এখন ভয়ংকর আততায়ী ঘাতক আক্রান্ত !
“নষ্ট শসা-পচা চালকুমড়ার ছাঁচ” এর মতন খোলসের
শক্ত দেয়ালের ওপাশের নির্মম অন্ধকারে
পৃথিবীর আজ গভীর অসুখ!
দেহখণ্ডের অদৃশ্য হননের আকস্মিকতায় হৃদপিণ্ড আজ
তীব্র আতঙ্কগ্রস্ত!
জীবনের মুমূর্ষু পিঠে মৃত্যু তার হলুদ ঠ্যাং উঁচিয়ে
বল্গাহীন ঘোড়ার মত নিষ্ঠুর উল্লসিত!
অন্ধমন বন্ধচোখের হুজুগে মানুষ হেলায়-ফেলায় তবু করে যায় বারবার,
ইতিহাসের ক্ষমাহীন ভুলের পুনরাবৃত্তি!
স্রেফ গুজব ভেবে সমষ্টি যখন –
” ওরে তোরা আজ যাসনে ঘরের বাহিরে”র
অনন্ত জীবনগানে মগ্ন;
তখন অদৃশ্য হন্তারকের অব্যর্থ স্পর্শের গুপ্ত বীভৎসতায় বসন্তের ঝরাপাতার মতন অজস্র মৃত্যুর অসহনীয় হাহাকারে,
ক্রমাগত স্তব্ধ হয়ে যায় জীবনের মগ্নগান!
সোভিয়েত রাশিয়া, হিরোশিমা- নাগাসাকি, কম্বোডিয়া, আনা-আনফাল, রুয়ান্ডা, জালিয়ানওয়ালাবাগ, ওরান,ওহানসহ –
‘৪৭, ‘৫২, ‘৭১ এর অমর্ষ গণকবরে উপছে ভীড় জমাচ্ছে
এই মৃত্যুর সংযাত্রিকদল!
বিকারগস্ত নীল হন্তারকের অবাঞ্ছিত ভেদনে
মনোহরনী রূপালি ইলিশের পোনার মত ঝাঁক ঝাকেঁ
প্রমথিত আজ এই ” মানুষ-পোনা” আমরা!
মানুষের অমূল্য নিঃশ্বাস মূল্যহীন নিঃস্বতায়
লীন হয়ে যায়!
জাগ্রত আলোকিত এই পৃথিবীর মানচিত্রে,
জীবনের গা ঘেঁষে ঘেঁষে মৃত্যুর মহামারী নিশ্চিহ্নকরণের
এখনই সময়!
“অন্ধকারের সারাৎসারে অনন্ত মৃত্যুর মতো মিশে থাকা ” ঘাতক নিধনের এখনই মোক্ষম লগ্ন!
এখনই অনিবার্য ক্ষণ-
তবুও অবিনশ্বর পৃথিবীর অপ্রতিরোধ্য সূর্যখণ্ডের অসীম
অপ্রতিরোধ্য অলৌকিক উত্তাপ পৃথক পৃথক মানুষী শরীরে ধারণ করে, ভয়ংকর সেই অশরীরী হন্তারক হত্যার!
মানুষের মৃত্যু যেন হয় নিজাবাসনে বহু ব্যবহৃত শয্যায় অন্তত মানুষের সান্নিধ্যে
সহজে
স্বাচ্ছল্যে
স্বাভাবিকতায়!
লেখক:: অধ্যাপক ড. নিলুফা আকতার, বাংলা বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-সিলেট।
বার্তা বিভাগ প্রধান