প্রবাসীদের আনাগোনা বেশি থাকায় এবং হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে না চলায় সর্বোচ্চ করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে মাদারীপুরের শিবচর। এমন অবস্থায় শিবচরের ঝুঁকিপূর্ণ চার এলাকায় প্রশাসনের বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে স্থানীয়দের প্রতি অনুরোধ জনানো হচ্ছে। এমন অবস্থায়ও ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন প্রবাসীরা। এ বিষয়ে তাদের সতর্ক করলেও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শিবচর উপজেলায় প্রবাসী রয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার। গত ১৫ দিনে ইতালিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৬০০ প্রবাসী শিবচরে ফিরেছেন। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনে কঠোর নির্দেশনা থাকলেও বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীরা হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন না। প্রকাশ্যে তারা চলাফেরা করছেন। সচেতন মহল তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিলে উল্টো তাদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
সম্প্রতি করোনা ঝুঁকিতে ফরিদপুর, মাদারীপুরসহ শিবচরকে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর শিবচর উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে যায়। জনসমাগম এড়াতে অবাধ বিচরণ ও প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার কঠোর হুঁশিয়ারি দেন তারা।
প্রশাসন বলছে, বিদেশফেরত প্রবাসীরা স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইন না মানলে কঠোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হোম কোয়ারেন্টাইন না মানালে তাদের বাধ্যতামূলক শিবচর শেখ ফজিলাতুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখা হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে উপজেলার পাচ্চর ও দক্ষিণ বহেরাতলা ইউনিয়নের (আংশিক) এবং পৌরসভার দুটি ওয়ার্ড ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। এ কারণে প্রশাসন গতকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রাথমিকভাবে ১৪ দিনের জন্য সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। যাতে বাজার এলাকায় অতিরিক্ত জনসমাগম না হয়। ওই সব এলাকার প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ গতিরোধ করবে পুলিশ। এজন্য প্রায় ২৫০ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসমাগম এড়াতে যেখানে-সেখানে অবাধ বিচরণ এবং প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য স্থানীয়দের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া যাতে কেউ বাড়ি থেকে বের না হয় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারি থাকছে। ওই সব এলাকায় অবাধে বিচরণ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। যাতে বিনা কারণে এসব এলাকায় মানুষ প্রবেশ বা ঘর থেকে বের হতে না পারে। উপজেলা প্রশাসনের গত বৃহস্পতিবারের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অর্থাৎ নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রাথমিকভাবে ১৪ দিনের জন্য সবধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে’।
ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক নূর-ই-আলম মিনা বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিবচর উপজেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জনসাধারণকে বিশেষ প্রয়োজনে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে পুলিশ সর্বাত্মক সহায়তা করবে।
সূত্র: জাগোনিউজ
প্রতিনিধি