করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে তা প্রতিরোধে সতর্কতা অবলম্বন করতে সিলেটবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইউনুছুর রহমান।
রোববার (৮ মার্চ) সিলেট শহীদ শামসুদ্দীন হাসপাতালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিলেটবাসীর প্রতি এমন আহ্বান জানান ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক। ব্রিফিংকালে মো. ইউনুছুর রহমান বলেন, ‘সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হলেও এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি।’
‘করোনাভাইরাস নিয়ে সিলেটের মানুষকে আতঙ্কিত নয়, সচেতন হতে হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। আপনারাও নিজেরাও সতর্ক থাকবেন। মাস্ক ব্যবহার করা বাহির থেকে ঘরে ফিরেই ভালোভাবে হাত-মুখ ধৌত করাসহ চিকিৎসকদের পরামর্শমতে সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করবেন।’
এর আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে সিলেট শহীদ শামসুদ্দীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কানাইঘাটের জাকারিয়াকে নিয়ে কথা বলেন চিকিৎসকরা। সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইউনুছুর রহমান, উপ-পরিচালক হিমাংশু লাল রায়, অধ্যাপক ডা. শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী ও শহীদ শামসুদ্দীন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
প্রেস ব্রিফিংকালে কানাইঘাটের যুবক জাকারিয়ার বিষয়ে ডা. শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, তার শরীর অনেক দিন থেকেই খারাপ। ফুসফুসে ইনফেকশন। মূলত: এর জন্যই তার ঘন ঘন কাশি ও জ্বর হয়। এর আগে বিভিন্ন সময় দেশে ও প্রবাসে রক্তপরীক্ষা করিয়েছে এবং চিকিৎসা গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি তার ফুসফুস ব্যাপকহারে কার্যকারিতা হারিয়েছে এবং এ জন্য কাশি, সর্দি ও জ্বর বেড়ে যাওয়ায় সে গত মাসের ২৯ তারিখ দেশে আসে এবং সিলেটের একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। তাতেও ফল না পাওয়ায় গত বুধবার সিলেট ওসমানী হাসপাতালে এসে সে নিজেই সন্দেহ প্রকাশ করে যে- সে হয়তো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ওই দিনই তাকে দ্রুত শহীদ শামসুদ্দীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বৃহস্পতিবার তার রক্ত ঢাকায় প্রেরণ করা হয় পরীক্ষার জন্য।
ডা. শিশির বলেন, গতকাল (শনিবার) রাতেই রিপোর্ট বের হলে আমরা নিশ্চিত হই যে- জাকারিয়া করোনাভাইরাস আক্রান্ত নন। আজ (রবিবার) সকালে সেই রিপোর্ট আমাদের হাতে আসে।
জাকারিয়ার শরীরের অবস্থা এবং তাকে ছাড়পত্র প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. শিশির বলেন, তার ফুসফুসে ইনফেকশন আছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দিয়ে আজ না হয় কালই তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, কানাইঘাট উপজেলার সুতার গ্রামের আলী আহমদের দুবাই প্রবাসী জাকারিয়া (৩২) ৬ বছর ধরে দুবাইয়ে গাড়ি চালকের চাকরি করেন। তিনি বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ দুবাইয়ে থাকেন। বর্তমানে তার স্ত্রী-সন্তান সেখানেই আছেন।
প্রতিনিধি