অনলাইন ডেস্ক
: উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সহিংসতার মধ্যে এক তরুণের মাথার বাঁ দিকে একটি লোহার যন্ত্রাংশ ড্রিল করার মতো ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। এই তরুণকে বাঁচাতে ‘গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে’ ভর্তি করা হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, আহতের নাম বিবেক চৌধুরী। বয়স ১৯ বছর।
বিবেকের পরিবার জানায়, গত মঙ্গলবার বিকেল ৪টার সময় বাড়ির কাছেই শিব মার্কেটে তিনি কাজে গিয়েছিলেন। ফেরার সময়েই গোলমালের মধ্যে পড়ে যান। তার পর কেউ এক জন তার মাথায় লোহার ওই রডের মতো জিনিসটি ঢুকিয়ে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, বিবেক পেশায় ড্রাইভার। কে বা কারা তাকে আঘাত করেছে তা এখনও জানা যায়নি।
খবরে বলা হয়, ওই তরুণ নিয়ে যারা হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন তারা জানান, সহিংসতার সময়ে কেউ একজন ওর মাথায় লোহার ওই জিনিসটা গেঁথে দিয়েছে। আধ ঘণ্টার মধ্যেই বিবেককে হাসপাতালের নিউরো বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। একাধিক পরীক্ষা করা হয়। সিটি স্ক্যানের জন্য তাকে অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কারণ, গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালে চিকিৎসার সব সুবিধা নেই।
এরপর মাঝরাতে তেগ বাহাদুর হাসপাতালেই ক্রেনিওটমি করা হয় ওই তরুণের। ক্রেনিওটমি বলতে মাথার খুলিতে অস্ত্রোপচারকেই বোঝায়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জিটিবি হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ড. প্রজ্ঞানের নেতৃত্বে তিনজন ডাক্তারের একটি টিম অস্ত্রোপচার করে বের করে আনে লোহার ওই যন্ত্রাংশ।
বুধবার জিটিবি হাসপাতালের বর্ষীয়ান চিকিৎসক সুনীল কুমার জানান, বিবেকের মাথায় অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। উনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। হাসপাতালের অ্যাসিসট্যান্ট এমএস রাকেশ কালরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার মোটেই সহজ ছিল না। বিশেষ করে সহিংসতায় আহত প্রায় ২০০ জনকে জিটিবিতে ভর্তি করা হয়। ফলে এত চাপ ছিল যে, এই অস্ত্রোপচার ছিল কঠিন। সামান্য এদিক-ওদিক হলেই জীবন সংশয় হতে পারত বিবেকের।
গত রোববার বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। বৃহস্পতিবার এক ধাক্কায় প্রাণ গেল আরও সাতজনের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এর ফলে দিল্লিতে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ জনে।
প্রতিনিধি