Home » ভারতে চাকরির পরীক্ষার নামে নারীদের ‌‘প্রেগন্যান্সি টেস্ট’

ভারতে চাকরির পরীক্ষার নামে নারীদের ‌‘প্রেগন্যান্সি টেস্ট’

অনলাইন ডেস্ক

: ভারতের গুজরাট রাজ্যে নারীদের চাকরি করার মতো শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে কিনা- তা পরীক্ষা করার সময় নগ্ন করে ‘প্রেগন্যান্সি টেস্ট’ করার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় অনেককে জোর করে স্ত্রীরোগ বিষয়ক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠার পর তার তদন্ত করছে কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী নারীরা জানিয়েছেন, তারা গর্ভবতী কিনা- সেই পরীক্ষাও করা হয়েছে। গুজরাটের সুরাট শহরের শিক্ষানবিশ সরকারি কেরানি হিসেবে কাজ করেন এই নারীরা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সুরাটের মিউনিসিপাল করপোরেশনের কর্মচারী সংঘের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই করপোরেশনে প্রায় ১০০ জন ভুক্তভোগী নারী কাজ করেন।

গুজরাটের একটি কলেজের ছাত্রীনিবাসে জোর করে ছাত্রীদের অন্তর্বাস খুলিয়ে তাদের ঋতুস্রাব পরীক্ষা করার ঘটনার অভিযোগ ওঠার কয়েকদিনের মধ্যেই ঘটলো এই ঘটনা।

সুরাট মিউনিসিপাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ নামের একটি সরকারি হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছে কর্মচারী সংঘ। তিন বছরের শিক্ষানবিশকাল শেষে স্থায়ীভাবে চাকরিতে নিয়োগ পেতে হলে প্রত্যেক শিক্ষানবিশকে এই স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, তাদের একটি কক্ষে নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হয় এবং প্রতিবারে কক্ষে ১০ জনকে একসঙ্গে উপস্থিত করা হয়। সেখানে নারী ডাক্তাররা তাদের ওপর আপত্তিকর ‘ফিঙ্গার টেস্ট’ পরিচালনা করেন।

ভুক্তভোগী নারীরা জানায়, পরীক্ষা চলাকালীন অবস্থায় কক্ষের দরজাও পুরোপুরি বন্ধ করা হয়নি। পরীক্ষা চলার সময় দরজায় শুধুমাত্র একটি পর্দা ছিল।

শিক্ষানবিশ নারীদের পরীক্ষা করার বিষয়টি নিয়ে কোনো আপত্তি নেই কর্মচারী সংঘের। তবে তারা হাসপাতালের পরীক্ষা পরিচালনা করার ‘অতিশয় দু:খজনক’ পদ্ধতির নিন্দা জানিয়েছে।

কর্মী সংঘের প্রধান টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘কোথাও নারী কর্মীদের এ রকম পরীক্ষা করা হয়েছে বলে আমি কখনো শুনিনি। কোনো কর্মচারীর স্বাস্থ্য নিয়ে তাদের সন্দেহ থাকলে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা উচিত ছিল তাদের।’

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাসপাতালের প্রধান বন্দনা দেশাই দাবি করেন, তাদের হাসপাতালে এ যাবৎ প্রায় ৪ হাজার শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং আজ পর্যন্ত একটি অভিযোগও আসেনি।

তিনি আরও বলেন, ‘শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা আমরা পুরোপুরি নিয়ম মেনেই করবো, কাজেই এ নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।’

নাম প্রকাশ না করে এক সরকারি কর্মকর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানান, তিনিও ২০ বছর আগে এই শারীরিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন, তবে সে সময় স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত কোনো পরীক্ষা করা হতো না।

এদিকে, এই ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছেন সুরাটের মিউনিসিপাল কমিশনার বাঞ্ছানিধি পানি। দুই সপ্তাহের মধ্যে এই অভিযোগের আনুষ্ঠানিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

শহরের মেয়র জগদিশ প্যাটেল সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানান, এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর। ভুক্তভোগী নারীদের দায়ের করা অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *