সাইফ হাসান ২১ ছুঁয়েছে সবে। এরই মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছে জাতীয় দলে। তাও টেস্টে ওপেনার হিসেবে। অভিষেকে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে আউট হয় শূন্যের রেকর্ডে নিজের নাম যুক্ত করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬ রান করেছেন চারটি ৪-এর মারে। তবে ব্যর্থ হলেও তার একটি স্বপ্ন পুরণ হয়েছে তা হলো দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে খেলা। তবে সেই সঙ্গে তিনি পা রেখেছেন নতুন চ্যালেঞ্জেও।
প্রশ্ন হচ্ছে তিনি কি পারবেন তামিমের সঙ্গী হতে! পরিসংখ্যান বলে ভীষণ কঠিন। কারণ এই ফরম্যাটে ওপেন করতে নেমে তামিমের সংগ্রহ ৪৩২৫ রান। তবে সেই ২০০৭-এ টেস্ট ক্রিকেট ছাড়া ওপেনার জাভেদ ওমর এখনো ১৬৭৮ রান করে রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। ইমরুল কায়েসের সংগ্রহ ১৫৬৮ রান। এই প্রজন্মের তারকা সৌম্য সরকার, সাদমান ইসলাম অনিক, লিটন দাসরা ওপেনার হিসেবে ৫’শ রানও ছুঁতে পারেননি। আর গতকাল মিরপুরে অনুশীলনের ফাঁকে সাইফ হাসান বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল তামিম ভাইয়ের সঙ্গে ওপেন করবো। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এখন যত লম্বা করতে হবে। যদি ভালো খেলি সে সুযোগ বেশি থাকবে।’
তবে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটারদের বাস্তবতা ভিন্ন। তামিম, জাভেদ ওমর ও ইমরুল ছাড়া আর কোনো ওপেনারের ১০০০ রান নেই। ৫০০’এর বেশি রান করেছেন মাত্র চারজন ক্রিকেটার। এর মধ্যে ২০০৪এ দল থেকে বাদ পড়া হান্নান সরকার করেছেন ৬৬১ রান। আছেন শাহরিয়ার নাফীস, আল শাহরিয়ার রোকন ও নাফীস ইকবাল। ২০১৭-২০১৯ পর্যন্ত ১০ টেস্টে সৌম্য সরকারের সংগ্রহ ৪৯৮ রান। ওপেন করতে এসে লিটন দাস ৬ ম্যাচে করেছেন ১৫৩ রান। ৪ ম্যাচে সাদমান ইসলামের সংগ্রহ ২৭৩ রান। সাইফ বলেন, ‘যেখানেই খেলেন না কেন যদি ২-৩ ম্যাচ খারাপ করেন আপনাকে কিন্তু ড্রপ দেয়া হয়। আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি পারফরম্যান্স ম্যাটার করে। ভালো খেললে জায়গাটা হবে। খারাপ খেললে বেরিয়ে যেতে হবে। আমি বিশ্বাস করি ভালো কিছু করার।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বেশ নার্ভাস ছিলেন সাইফ। তিনি বলেন, ‘প্রথম ইনিংসে একটু নার্ভাস ছিলাম। তবে দ্বিতীয় ইনিংস ভালো লাগছিল তবে দুর্ভাগ্য বলটা নিচু হয়েছিল আরেকটু ফোকাস থাকলে হয়ত বলটা ম্যানেজ করতে পারতাম। আরও ফোকাস লেভেল বাড়াতে হবে মনযোগ বাড়াতে হবে। জানি, এতটা সহজ হবে না। কিন্তু এই লেভেলে আসার জন্যই সব কিছু করা। চেষ্টা করবো সামনের ম্যাচে যদি সুযোগ আসে ভালো খেলার। সহজ হবে না বলতে আমরা যেভাবে খেলে আসছি ঘরোয়া ক্রিকেটে সেদিক থেকে চিন্তা করলে অত সহজ না। আমাদের মানসিকভাবে তৈরি হতে হবে। সুযোগ পেলে রান বড় করতে হবে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের আগে চলছে টাইগারদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। গতকাল অনুশীলনে উপস্থিত ছিলেন সব কোচিং স্টাফও। দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন স্পিন বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরি, ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি ও ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক। আগে থেকেই ছিলেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। উপস্থিত ছিলেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও। তবে কুশল বিনিয়ম করে মাঠ ছাড়েন তিনি। শুরুতে ফুটবল খেলে ওয়ার্ম আপ করে দল। এরপর রায়ন কুকের ফিল্ডিং ক্লাসে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় তামিম, মোস্তাফিজ, তাইজুল, সাইফদের। ম্যাচের আগে নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী সাইফ। তিনি বলেন, ‘প্রস্ততি আমারদের খুব ভালো আমাদের। দুই দিন ধরে আমরা অনুশীলন করছি। এর আগেও সবাই যার যার মতো প্রস্তত হয়েছি। আশা করি ভালো কিছু হবে।’
প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েকে ছোট করে না দেখলেও দল যে জিততে মরিয়া তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ শেষ ৬ টেস্টে হার। এর মধ্যে ৫টিতেই ইনিংস ব্যবধানে। সাইফ বলেন, ‘আসলে কোনো দলকেই ছোট করে নেয়ার কিছু নেই । কিন্তু যদি আমরা প্রক্রিয়ায় ঠিক থাকি ভালো কিছু হবে। শেষ টেস্ট হারের পর আমরা সবাই বসেছিলাম। তো ওখানে আমরা সবাই নতুন করে শুরু করার পরিকল্পনা করেছি। চেষ্টা করছি কীভাবে আরও ভালো করা যায়। ছোট ছোট জিনিস থেকে আমরা শুরু করতে যাচ্ছি। আশা করি সামনের টেস্ট থেকে এটা শুরু হবে। ভালো একটা ফলাফল সামনে পাবো আশা করি।
প্রতিনিধি