বিশ্ব যুব ক্রিকেটের বাদশা, বাংলাদেশের ‘আকবর আলী দ্য গ্রেট’। পচেফস্ট্রুমের ফাইনালে প্রতাপশালী ভারতের বিপক্ষে যে শাসন জারি করেছিলেন, তা তো বাদশা আকবরের শাসনেরই প্রতিচ্ছবি। যে ঢঙে ব্যাট করলেন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যেভাবে আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখলেন, তাতে অভিভূত তারই ক্রিকেট অগ্রজ মাশরাফি বিন মুর্তজা। নড়াইল এক্সপ্রেস তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আকবর তুমি অনিন্দ্যসুন্দর। তোমার কাছ থেকে শিখলাম কী করে আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।’
বিশ্বকাপ শুরুর আগে দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘আমাদের এ দলটি শুধু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য খেলবে।’ গত দুই বছরের পরিশ্রম, দল হিসেবে খেলার মানসিতা এবং একাগ্রতা এই আত্মবিশ্বাস দিয়েছিল আকবরকে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে দেখালেন তারা নতুন প্রজন্ম, কথা দিয়ে কথা রাখেন। খেলা শেষে সবার আগে বিসিবির কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় আকবর বলেন, ‘আমরা যত ম্যাচ একসঙ্গে খেলেছি, অন্য কোনো দল তা খেলেনি। বাংলাদেশের আগের কোনো দলও এই সুযোগ পায়নি। পরিস্থিতি বদলেছে। বিদেশে খেলা এবং সুন্দর পরিবেশ দেওয়ায় বিসিবিকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।’
বিকেএসপির ছাত্র আকবর প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার কারণেই নেতৃত্বের গুণাবলি পেয়েছেন। বয়সভিত্তিক দল থেকেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘অধিনায়কত্ব আমার জন্য নতুন নয়। প্রত্যেক অধিনায়কের আলাদা দর্শন থাকে, আমি কারওটা অনুসরণ করি না। তবে উইকেটরক্ষক অধিনায়ক হিসেবে আমি পেছন থেকে ব্যাটসম্যানদের দেখি এবং সেটা কাজে লাগাই।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক জানান, লম্বা সময় একসঙ্গে থাকায় একটা ইউনিট হয়ে উঠতে পেরেছেন তারা। গত ১৫ মাসের একতাই বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হতে সাহায্য করেছে বাংলাদেশকে। তিনি বলেন, ‘ইংল্যান্ড ও এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা অসাধারণ অভিজ্ঞতা। আমরা যে লম্বা সময় একসঙ্গে ছিলাম, সেটা ম্যাচ খেলার সময় কাজে দিয়েছে। মাঠের বাইরে আমরা দ্বিতীয় একটা পরিবার ছিলাম। প্রত্যেকে প্রত্যেকের ভেতর এবং বাইরে জানত। এটাই আমাদের ইউনিটি।’
একতাবদ্ধ হয়ে বিশ্বকাপ জিতে দেশের ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস রচনা করল আকবরের দল। ১৬ কোটি মানুষ তাদের জানাল প্রাণঢালা অভিনন্দন। তাই তো সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকার ড্রেসিংরুমে বাঁধনহারা উল্লাসের বিচ্ছুরণে পুলকিত হলেন এই ব-দ্বীপের ক্রিকেটানুরাগীরা।
প্রতিনিধি