Home » হবিগঞ্জে প্রেম প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জীবন দিতে হয়েছে জেরিনকে

হবিগঞ্জে প্রেম প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জীবন দিতে হয়েছে জেরিনকে

সড়ক দূর্ঘটনা নয়, একই গ্রামের বখাটে যুবকের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারণেই জীবন দিতে হয়েছে মেধাবী ছাত্রী মদিনাতুল কোবরা জেরিনকে। সে এ বছরের এসএসসি পরিক্ষার্থী ছিল।নিহত মদিনাতুল কোবরা জেরিন সদর উপজেলার ধল গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে ও রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী ছিল।

এ আগেও পিএসসি ও জেএসসিতে সে এ প্লাস পেয়ে কৃতকার্য হয়।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান- হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মাদিনাতুল কোবরা জেরিনের মৃত্যু প্রথমে সড়ক দূর্ঘটনা মনে করা হলেও মূলত সেটি সড়ক দূর্ঘটনা ছিল না। একই গ্রামের দিদার হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন প্রায়ই জেরিনকে প্রেম প্রস্তাব দিত। জাকির বারবার প্রেম নিবেদন করলে জেরিন তাতে সাড়া দেয়নি।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাকির তার বন্ধুদের সহযোগিতায় জেরিনকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেয়। গত রোববার সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় জেরিনের বাড়ির সামনে একটি সিএনজি অটোরিক্সা দাড় করিয়ে রাখে জাকির। এ সময় জেরিন স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েই সিএনজিতে উঠে যায়।

পথিমধ্যে জাকির হোসেন ও তার সহযোগী হৃদয় একই সিএনজিতে উঠে জেরিনকে আবারও প্রেস নিবেদন করে। জেরিন রাজি না হওয়ায় জাকির হোসেন তাকে অপরহরণ করার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে জেরিন সিএনজি থেকে পরে যায়। এতে সে গুরুত্বর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন জেরিনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশংকাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সোমবার সকালে সে মারা যায়।

এদিকে, তার মৃত্যুর সংবাদ সহপাঠীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা সড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভ করে। জেরিনের সহপাঠিদের বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। এ ঘটনায় জাকির হোসেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবদ করলে প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে সে ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে মঙ্গলবার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিও দেয় জাকির।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, সোমবার রাতে নিহত জেরিনের পিতা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দয়ের করেছেন। মামলায় জাকির হোসেন ছাড়াও আরো ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত করে আসামী করা হয়েছে। ইতিমেধ্য জাকিরকে আটক করে আদালতে জাবনবন্দি প্রদান শেষে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তার দেয়া তথ্য মতে সিএনজি ড্রাইভার নুর আলম ও তার সহযোগী হৃদয়কে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *