Home » এফডিসি কর্মকর্তার মাথা-পায়ে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন

এফডিসি কর্মকর্তার মাথা-পায়ে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন

হেফাজতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকের পায়ে, গলায় ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ।আজ সোমবার বিকেলে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।

ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘তার (আবু বক্কর) গলায় একটি আঘাতের কালো দাগ পাওয়া গেছে। গলা থেকে টিস্যু নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করবো যে আসলে সেটা ফাঁসের দাগ কি না। পাশাপাশি নিহতের মাথায় এবং পায়ে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। সবগুলো মিলিয়েই আমরা পর্যালোচনা করবো আসলে তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে। আমরা তার ভিসেরাও সংগ্রহ করেছি।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের সবগুলো রিপোর্ট হাতে আসতে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগবে। এদিকে, বিএফডিসি কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিকের (৪৫) মৃত্যুর ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আজমের ফাঁসির দাবি করেছেন তার সহকর্মীরা।

আজ সোমবার সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে ওসির ফাঁসির দাবিতে বিএফডিসির সামনে বিক্ষোভ করেন সব শ্রেণির কর্মচারীরা। এ সময় তাদেরকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি আলী আজমের ‘ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়। সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিএফডিসির সড়ক অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। পরবর্তীতে পুলিশের আশ্বাসে তারা সড়ক ছেড়ে দেন।

এ বিষয়ে বিএফডিসি’র তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়নের নেত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, ‘আবু বক্করকে গ্রেপ্তার করা হলো শনিবার, তখনো তার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। মামলা হয়েছে রোববার। মামলা হওয়ার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে। জানালার গ্রিলের সঙ্গে কেউ চাদর দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তার শরীরে দাগ, গলায় চিকন দাগ, চাদর দিয়ে আত্মহত্যা করলে তার গলায় মোটা দাগ থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আবু বক্কর সরকারি কর্মকর্তা। ঢাকার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেওড়াপাড়ার একটি কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, এমন চিঠিও আসছে। তার সঙ্গে পুলিশ এমন আচারণ করলো কীভাবে? আমরা এর বিচার চাই।’

বিএফডিসির ফ্লোর সেটিং ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘থানায় মানুষ নিরাপদে থাকে। সেখানে কীভাবে আবু বক্কর মারা গেল? সুস্থ মানুষকে মোটরসাইকেল থেকে গ্রেপ্তার করলো। থানা থেকে তাকে লাশ হয়ে বের হতে হলো। থানা হেফাজতে এই মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না।

তবে এ মৃত্যুর বিষয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম গতকাল রোববার আমাদের সময় অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘রাজধানীর সাতরাস্তা এলাকার একটি বাসা থেকে এক নারী ও তার স্বামী মিলে আবু বক্কর সিদ্দিককে আটক করে থানায় ফোন করেছিল। এরপর থানা থেকে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আবু বক্কর সিদ্দিককে থানায় নিয়ে আসে। পরে ওই নারী নিজে বাদী হয়ে ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।’

হাজতে আসামির মৃত্যুর ঘটনায় তিনি বলেন, ‘এটি একটি আত্মহত্যা। কারণ আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে। সেখানে পুরো ঘটনাটি স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, শনিবার দিবাগত রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার হাজতখানায় মারা যান আবু বক্কর। পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তি হাজতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু নিহতের পরিবারের দাবি, হাজতে আবু বক্করকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সুত্র: আমাদেরসময়

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *