অনলাইন ডেস্ক: টঙ্গীর তুরাগ তীরে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ পর্বের আখেরি মোনাজাত আজ রোববার। এতে অংশ নেবেন বরাবরের মতো অন্তত কয়েক লাখ মুসল্লি। এ কারণে ভোর থেকেই ইজতেমা এলাকার আশপাশের বিভিন্ন সড়কে বইছে মুসল্লিদের ময়দানমুখী স্রোত। বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইজতেমার মুরব্বি মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। তিনি জানান, দিল্লির মাওলানা জমশেদ মোনাজাত পরিচালনা করবেন।
শেষ পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে টঙ্গীর তুরাগ নদের পাড়ে ইতিমধ্যে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখনো ময়দানমুখী মুসল্লিরা। লাখ লাখ মুসল্লি বিভিন্ন যানবাহন ও পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানের দিকে ছুটে যাচ্ছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মুসল্লিদের ভিড়ও।
এরই মধ্যে তাবলিগ জামাতের সঙ্গে কয়েক লাখ মুসল্লি খিত্তায় খিত্তায় ময়দানে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া মোনাজাতে অংশ নিতে ময়দানের আশপাশের অলিগলি, বাড়ি ও কলকারখানার ছাদ, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ও খালি জায়গায় পলিথিন, পত্রিকা, পাটি ও জায়নামাজ বিছিয়ে অবস্থান নিয়েছেন অনেকেই।
এদিকে দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে লাখো মুসল্লির সমাগম নির্বিঘ্ন করতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ইজতেমায় মুসল্লিদের আসা-যাওয়া নিবিঘ্ন করতে শনিবার দিবাগত ভোর ৪টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর চৌরাস্তায় এবং ঢাকার মহাখালী থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ থেকে আসা গাড়ি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া টঙ্গীমুখী সব শাখা সড়কগুলো বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ ট্রাফিক ব্যবস্থা চলবে। পুলিশ কমিশনার বলেন, ইজতেমায় যোগ দেওয়া বৃদ্ধ মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য শাটল বাসের ব্যবস্থা থাকবে।
টঙ্গীর রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তা জানান, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে রেলওয়ে আখাউড়া, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। মোনাজাতের আগে ও পরে সব ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে। ইজতেমায় আগত যাত্রীদের কথা বিবেচনায় রেখে টঙ্গী রেলওয়ে জংশনে অতিরিক্ত টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব আন্তঃনগর ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে। এ ছাড়া ১৬টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা থাকছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব ভারতের মওলানা ইব্রাহিম দেওলার আমবয়ানের মধ্যে দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়। এরপর শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বাদ ফজর আমবয়ান করেন পাকিস্তানি মওলানা ওবায়দুল্লাহ খুরশিদ। রোববার (১২ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতে শেষ হয় ইজতেমার প্রথম পর্ব। এরপর বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) প্রাক-বয়ানে শুরু হয় ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। যা রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হচ্ছে।
প্রতিনিধি