বাংলাদেশের তুণমূলের স্বাস্থ্যসেবা ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের মূল কারিগর এফপিআই ও এফডব্লিউএদের গ্রেড পরিবর্তন, নিয়োগবিধি বাস্তবায়ন ও পদোন্নতি সহ ৫ দফা দাবিতে আগামী ২৭ ডিসেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা হবে।
এফপিআই ও এফডব্লিউএদের সংগঠন বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা মাঠ কর্মচারী সমিতি শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন, দাবি বাস্তাবায়ন কমিটির সদস্য সচিব জাকিরুননেছা সুমি, আহবায়ক ফিরোজ আলী, আহবায়ক কমিটির সদস্য নাজনীন আক্তার, সদস্য সচিব আমির আলী মোড়ল ও যুগ্ম আহবায়ক শিরিয়া বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাফল্যজনক টিকাদান কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে মা ও শিশুর মৃত্যুরোধে সাউথ সাউথ পুরস্কার পাওয়ায় সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন জানানো হবে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৯৭৬ সালে নিয়োগকৃত মাঠ কর্মচারীরা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে স্যাটেলাইট, ইপিআই ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে গর্ভাবস্থায় প্রসবকালীন ও প্রসবোত্তর সেবা প্রদান, শিশুদের শাল দুধ খাওয়ানো ও গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের টিকাদান, কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন সেবা, বাল্যবিয়ে রোধ, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও কলেরা-আমাশয় সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি, আদমশুমারি, খানাশুমারি, নির্বাচনী দায়িত্ব, শিক্ষা, কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন ইত্যাদি সামাজিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন। ফলে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে; কিন্তু জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের সাফল্যকে বিশ্ব স্বীকৃতি দিলেও সরকারের কতিপয় আমলা পরিবার কল্যাণ সহকারীদের পরিপত্র জারি করে ৪র্থ শ্রেণি করে রেখেছেন, যা সম্পূর্ণ অমানবিক। ১৯৯৮ ও ২০১৫ সালে এ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগবিধি হলেও এফপিআই ও এফডব্লিউএদের রহস্যজনক কারণে নিয়োগবিধি করা হয়নি।
আরো বলা হয়, কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি ১৪তম গ্রেড, স্বাস্থ্য সহকারী ১৬তম গ্রেড, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ১৪তম গ্রেড, ইউনিয়ন পর্যায়ের ব্লক সুপার ভাইজার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ১১তম গ্রেডে পদোন্নতি পেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৭৭-৮৫ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক ও এএফডব্লিউএ ৪০০ টাকা বেতন স্কেলে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও এফপিআইগণ ৪৩০ টাকা বেতন স্কেলে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি হিসেবে একত্রে ছিলেন। ২০১৫ সাল থেকে সহকারী শিক্ষকগণ ১৪তম গ্রেডে ও প্রধান শিক্ষকবৃন্দ ১১তম গ্রেডে অবস্থান করছেন; কিন্তু এফডব্লিউএদের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের ১৬তম গ্রেড থেকে পদোন্নতি না দিয়ে ১৭তম গ্রেডে (৪র্থ শ্রেণি) এবং এফপিআইগণকে ১৬তম গ্রেডে রাখা হয়েছে। এমন বৈষম্য নজিরবিহীন। এ কারণে ন্যায্য গ্রেড বঞ্চিত কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাশেদা খানম রিনা, আব্দুল বারি, দেলোয়ার হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব, কামাল আহমদ, রবিন আহমদ, কণা প্রভা দে, ইসরাত জাহান, রাশেদুল ইসলাম, আফজাল হোসেন, তোফায়েল আহমদ প্রমুখ।